ঢাকা: দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এমন নিউজ না করার আহ্বান জানিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর বলেছেন, আমাদের সবার এক থাকতে হবে। এ দেশ যাতে কোনোভাবেই অস্থির না হয়।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নতুন কার্যালয় পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি ফিতা কেটে ক্র্যাবের নতুন কার্যালয়ের ডেকোরেশনের (সাজসজ্জা) কাজ উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ক্র্যাবকে স্থায়ী এ কার্যালয় উপহার দেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর।
বসুন্ধরা এমডি বলেন, আপনারা ৩৬ বছর পর স্থায়ী একটা জায়গা পেয়েছেন, আগামীতে যাতে আরও ভালো একটা জায়গা দিতে পারি সেটি আমি দেখবো। ভবিষ্যতে আমাদের এলাকায় একটা ভবন করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করবো, তবে এ স্পেসটাও সুন্দর। সামনে আরো ভালো কিছু হবে ইনশাল্লাহ।
ক্র্যাব মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে বসুন্ধরা গ্রুপের অংশগ্রহণের আহ্বান প্রসঙ্গে বিশিষ্ট এ শিল্পপতি বলেন, আপনারা অ্যাওয়ার্ড করেন, আমি করে দেবো। যা-যা করা দরকার করবো।
এমডি আরও বলেন, আজ আপনাদের এত ভালোবাসা পেয়েছি যে, আমি বলার মতো কিছু পাচ্ছি না। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমরা সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো।
আমার বাবার পক্ষ থেকে বলতে চাই, তিনি বলেছেন—এদের যে ৩২৫ জন মেম্বার আছে, তাদের সুখ-দুঃখে যখন যেটা লাগবে, আমরা আপনাদের পাশে থাকবো। যে কোনো ব্যাপারে আপনাদের কোনো আবেদন থাকলে, আমার সেক্রেটারি বা আপনাদের সভাপতি আছেন, তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। সাধ্যমতো আমি আপনাদের সহায়তা করবো।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আমার পরিবার, আমাকে পরিবার ঘোষণা দিয়ে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসেছেন। আপনারা পরিবারের মতোই আমাকে ট্রিট করেছেন। এটাতে আমি চিরকৃতজ্ঞ, আপনাদের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। আপনারা যেহেতু আমাকে পরিবার হিসেবে মনে করেছেন, আমি পরিবার হিসেবেই আপনাদের ট্রিট করবো। সায়েম সোবহান আনভীর আপনাদের সঙ্গেই থাকবে।
এ সময় ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, আজকের দিনটি আমাদের ক্র্যাবের ইতিহাসে একটা ঐতিহাসিক দিন। এই ঐতিহাসিক দিন যিনি করে দিয়েছেন তিনি আমাদের সবার প্রিয় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর।
আমাদের ক্র্যাবের ৩৬ বছরের ইতিহাসটা ছিল এক রকম, ৩৬ বছর আগে যারা ক্র্যাব তৈরি করেছিলেন রমনার বটতলায় বসে মিটিং করে। ৩৬ বছরে আমাদের সদস্য সংখ্যা বেড়েছে, অবকাঠামোগতভাবে তেমন কিছু বাড়েনি। আমাদের কোনো ছাদ ছিল না, কোনো সেল্টার ছিল না।
আমরা কারো বাসায় মিটিং করেছি, এভাবে করতে করতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এখানে অস্থায়ী একটা জায়গা হয়। ৩৬ বছর পর আমরা প্রায় ৩ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি ভবনের ফ্লোর পেয়েছি। যিনি দিয়েছেন সেটা সবাই দেখেছেন, সবাই জানেন। আমি আবেগাপ্লুত, এটা আমার একটা স্বপ্ন ছিল, এ স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।
মির্জা মেহেদী তমাল আরও বলেন, সায়েম সোবহান আনভীর সবাইকে স্বপ্ন দেখান, শুধু স্বপ্ন দেখানই না, স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেন। এমন একটি স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, তিনি দেখিয়েছিলেন এবং খুবই স্বল্প সময়ে তিনি বাস্তবায়ন করে দিয়েছেন। আমরা চিরকৃতজ্ঞ। আমরা আপনার অবদান কোনোদিন ভুলতে পারব না, এটা ভোলার নয়।
সায়েম সোবহান আনভীরকে উদ্দেশ্য করে ক্র্যাব সভাপতি আরও বলেন, আপনি ক্র্যাব পরিবারের পাশে থাকার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তা আমাদের সাহস জুগিয়েছে আরও বড় কোনো স্বপ্ন ছোঁয়ার। আমরা এখন আর নিজেদের আর্থিকভাবে দুর্বল ভাবি না, কারণ আপনার হাত রয়েছে আমাদের মাথার ওপর। আপনি পাশে থাকার যে প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন, তা আমাদের শক্তি আর সাহসকে শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্র্যাব এখন এক শক্তিশালী সংগঠন। আপনার সাহস-শক্তি পেয়ে ক্র্যাব সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও দুশ্চিন্তামুক্ত, কারণ আপনি আমাদের পাশে আছেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, কমিটমেন্ট অনেকেই দেয়, কিন্তু সবাই রক্ষা করতে পারে না। কেউ কেউ কমিটমেন্ট রক্ষা করেন। সে রকম একজন মানুষ সায়েম সোবহান আনভীর। যিনি কথা দিলে তার নড়চড় হয় না। আমি মনে করি, আপনাদের সঙ্গে তার পথচলা কেবল শুরু হলো। তিনি একটি কার্যালয় দিয়েছেন। আরও অনেক বড় পরিসরে কিছু হবে, আমার দেখা মতে তিনি সেরকম একজন অনন্য উচ্চতার ব্যতিক্রমী মানুষ।
তিনি মিডিয়াবান্ধব, করোনাকালেও তার অধীন কোনো মিডিয়া হাউজের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়নি। তিনি মিডিয়াকর্মীদের যে কোনো সমস্যার কথা শুনলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে, গণমাধ্যম নিয়ে তার আরও অনেক ভালো পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি একজন গণমাধ্যমকর্মীর মতোই গণমাধ্যমের পাশে দাঁড়ান, বলেন নঈম নিজাম।
কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন তার বক্তব্যে সায়েম সোবহান আনভীরের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরেন।
মঞ্চে বসা সায়েম সোবহান আনভীরকে দেখিয়ে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, যে লোকটাকে দেখতে পাচ্ছেন, তার হৃদয় আরও হাজার হাজার গুণ বড়। যা পরিমাপ করে শেষ করা যায় না। এর প্রমাণ আপনারাই পাবেন। একজন সায়েম সোবহান আনভীরকে পাশে পেলে আর কিছুর প্রয়োজন পড়ে না। আপনাদেরও আর কিছুর প্রয়োজন পড়বে না। কারণ আপনাদের পাশে একজন মহান দানশীল, বিরাট মনের অধিকারী সায়েম সোবহান আনভীর আছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের ছেলে ওয়ালিদ সোবহান।
ক্র্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি পারভেজ খান, আবুল খায়ের, মিজান মালিক, ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমানুর রহমান রনি।
আরও উপস্থিত ছিলেন ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলনিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র সম্পাদক জুয়েল মাজহার, বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলীসহ ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য ও ক্র্যাব সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ডিসেস্বর ২২, ২০২২
পিএম/জেএইচ