চাঁদপুর: কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। এতে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে এবং পাশ্ববর্তী জমিগুলো ভেঙে পড়ছে।
চাঁদপুর সদরের হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এমনটাই ঘটছে। সেখানে কৃষি জমির মাটি এনে বিক্রি হচ্ছে পাশবর্তী চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা ইটভাটায়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে গভীর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েক জমির মাটি কাটা শেষ হয়েছে। মাটি কাটতে গিয়ে বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে ওই মাঠের পানি নিস্কাশনের জন্য একমাত্র খালট। যে খালটি দিয়ে বর্ষা মৌসুমে এই মাঠে পানি প্রবেশ করে এবং নিস্কাশন হয়। বর্ষায় পানি প্রবেশ করার কারণে জমিতে পলি পড়ে উর্বর হয় এবং একাধিক ফসল উৎপাদন হয়।
স্থানীয় কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, যুগ যুগ ধরে এই মাঠে ফসল করে আসছি আমরা। ধান, আলু, ভুট্টা, শাক সবজি আবাদ হয় এসব জমিতে। মাত্র কয়েকজন কৃষক হঠাৎ করে এই জমিতে মাছের খামার করবেন বলে জমিগুলোর মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এই ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেননি কেউ।
আরেক কৃষক রহমান শেখ বলেন, এলাকার কাদের রাঢ়ী মাটি কাটার টেন্ডার নিয়েছেন। তিনি ইটভাটার মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে ফসলি জমিগুলোর ক্ষতি করছেন। তারা আমাদের জমির পাশ থেকে গর্ত করে মাটি কাটছে। আমাদের জমিগুলোতেও এখন আর ফসল হবে না। সারা বছর জমিতে পানি আটকে থাকলে ফসল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আমরা এই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ভেকু দিয়ে মাটি কাটার টেন্ডার নেওয়া কাদির রাঢ়ী এই বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, জমির উপরের অংশের মাটি কেটে বিক্রি করা খুবই ক্ষতিকর। কারণ এই মাটি খুবই উর্বর থাকে। একবার মাটি কাটা হলে ১৫-২০ বছরও সেই ক্ষতি পূরণ হয় না। হানারচরে কৃষি জমির যে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছে জেনেছি। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্যাহ বাংলানিউজকে বলেন, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুসারে কৃষি জমি থেকে মাটি ড্রেজিং কিংবা অন্য কোনোভাবে কেটে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার সুযোগ নেই। আমরা জেনেছি হানারচরে কৃষি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। আমরা অতি শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসএএইচ