ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হৃদয়ে শুদ্ধ আনন্দের বড়দিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
হৃদয়ে শুদ্ধ আনন্দের বড়দিন রাজধানীর একটি গির্জায় প্রার্থনারত খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনকে সামনে রেখে রাজধানীর গির্জাগুলোয় এখন উৎসবের আবহ। গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে শুভ বড়দিন। এ দিন সকালে বিভিন্ন গির্জায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড় দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর দেশ ও জাতির মঙ্গলকামনা করেন ভক্তরা।

বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশের গির্জাগুলো জাঁকজমকপূর্ণভাবেই সাজানো হয়েছে। রাজধানীর কাকরাইলের রমনা সেন্ট ম্যারিস ক্যাথিড্রাল চার্চ, তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রানির গির্জা ও মোহাম্মদপুরের সেন্ট ক্রিস্টিনা চার্চে বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণিল সাজে তৈরি করা হয়েছে ‘ক্রিসমাস ট্রি’। গির্জা প্রাঙ্গণে রংবেরঙের বাতি দিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরা নানাভাবে বড়দিন উদযাপন করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে গির্জার উপাসনায় যোগ দেওয়া সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম জনপ্রিয় প্রথা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন উপাসনা পদ্ধতি ও জনপ্রিয় রীতিনীতি।

রাজধানীর তেজগাও, কাকরাইল ধর্মপল্লী ঘুরে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে গির্জাগুলোতে প্রারম্ভিক প্রার্থনা শুরু হয়। এছাড়া দিনের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়, কেক কাটা, প্রীতিভোজ, শিশুদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জা।



খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে উৎসব উদযাপন অনেকটা অনাড়ম্বরভাবে হয়েছিল। তবে বড়দিনের আয়োজনে এবার চাকচিক্য বেড়েছে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা শিথিল থাকায় এবারের আয়োজন আরও চমকপূর্ণ হচ্ছে।

এ বিষয়ে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে এবং ঈশ্বরের মহিমা প্রচারে যিশু খ্রিস্ট এই দিনে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরাও ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন।

বিশপীয় খ্রিস্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশনের সেক্রেটারি ফাদার প্যাট্রিক গমেজ বলেন, খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাসী সমাজ আজ মহাসমারোহে পালন করছে যিশু খ্রিস্টের জন্ম দিবস বড়দিন। আসুন আমরা সবাই এই বড়দিনে যিশুর জন্মদিনে ভ্রাতৃত্ব মূল্যবোধ বাস্তবায়ন করি পরিবারে, সমাজে, গোটা বাংলাদেশে। আমরা যেন ধ্বংস না করি। আমরা যেন ঈশ্বরের সৃষ্টিকে নোংরা না করি; বরং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলি। আর এভাবেই আমরা বিশ্বসৃষ্টির সঙ্গে আমাদের মিলন প্রকাশ করতে পারি।

দুপুরে বিভিন্ন ধর্মপল্লি ঘুরে দেখা গেছে, গির্জায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়েছে। সমাধিস্থল সাজাতে ব্যস্ত বেশ কয়েকজন কর্মী। বড়দিনে আরাধনায় অংশ নিতে ধর্মপল্লির সামনে দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। গির্জায় যিশু খ্রিস্টের জন্মের সময়কে স্মরণ করতে আলাদাভাবে বানানো হয়েছে গোয়ালঘর। এখানে রয়েছে শিশু যিশু খ্রিষ্ট, মা মেরি, জোশেফ, উট ও ভেড়াসহ বেশ কয়েকটি পশুর আদল। ঘরের ওপরে রয়েছে আলোকোজ্জ্বল তারা, যা দেখে পণ্ডিতরা যিশুর জন্মের বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন।

এদিন সকালে তেজগাঁওয়ের গির্জায় সকাল ৯টা, লক্ষ্মীবাজার গির্জায় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, মিরপুরে সকাল ৯টায়, মোহাম্মদপুরে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, রমনায় সকাল ৮টায়, কাফরুলে সকাল ৯টায় এবাং ভাটারার গির্জায় সকাল ৯টায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীসহ সকলের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।