ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বোমা মেশিন দিয়ে নদী হত্যা বন্ধ করতে হবে: শরীফ জামিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
বোমা মেশিন দিয়ে নদী হত্যা বন্ধ করতে হবে: শরীফ জামিল

সিলেট: নদীবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।  

তিনি বলেছেন, নদী বাংলাদেশের প্রাণ।

জালের মতো ছড়ানো নদীগুলো সর্বক্ষেত্রেই পালন করেছে অগ্রনী ভূমিকা। মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীগুলো শত্রুর জন্য অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। বাঙালির জীবন, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের সঙ্গে নদীগুলো জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। কিন্তু মানুষের চিরসখা সে নদীগুলোকে অপরিকল্পিত সর্বনাশা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যে বা যারা এসব নদীবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জৈন্তাপুরের সারিঘাটে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি অবিলম্বে সারি নদীতে অবৈধ বোমা মেশিন বন্ধের জন্যও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিন সিলেটের ’নীল নদ’ খ্যাত সারি নদীতে অবৈধ বোমা মেশিনের ব্যবহার বন্ধের দাবিতে সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন ও সারি বারকি শ্রমিক সমিতির যৌথ উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সারি বারকি শ্রমিক সমিতির সভাপতি আমির আলীর সভাপতিত্বে ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদীর সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাপার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জেল সোহেল।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল, সাবেক ইউপি সদস্য জমসেদ আলী, বৃহত্তর জৈন্তা পাথর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাংবাদিক সোহেল আহমদ, সারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আহসান আল জুবায়ের, সারি বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুস সোবহান, সোলেমান প্রমুখ।

শরীফ জামিল আরও বলেন, পরিবেশ ও নদী ধ্বংসের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি বা বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারি নানা সংস্থারও ভূমিকা অস্বীকারের উপায় নেই। উন্নয়নের নামে স্থানীয় মানুষের মতামতের তোয়াক্কা না করে অনেক অপরিকল্পিত প্রকল্পের নামে নদী বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক নদীকে হত্যা করা হয়েছে। কোনো কোনো নদীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। নদী ও তার প্লাবনভূমির প্রাণ, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বালুমহাল ও নদী ব্যবস্থাপনা আইনে নদীতে বোমা মেশিন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। বেড়ায় যদি ধান খায় তবে সে ধান কিছুতেই রক্ষা করা যাবে না।  তিনি অবিলম্বে সারি নদীতে অবৈধ বোমা মেশিন বন্ধের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সারি নদীতে বোমা মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে। এটা সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। প্রশাসন কোনোভাবেই বালুমহালে যান্ত্রিক পদ্ধতির অনুমোদন দিতে পারেন না। বালুমহাল ইজারার শর্তে এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তাই নদীতে বোমা মেশিনের ব্যবহারের আইনগত কোনো সুযোগ নেই।

বক্তারা অবিলম্বে সারিসহ সব নদীর দখল, দূষণ, ভরাটসহ নদীবিধ্বংসী সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে নদীর স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
এনইউ/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।