ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিদেশে বসেও প্রবাসীরা এনআইডি কার্ড পাবেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
বিদেশে বসেও প্রবাসীরা এনআইডি কার্ড পাবেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট কর অঞ্চল আয়োজিত সেরা করদাতাদের সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: বিদেশে বসেও প্রবাসীরা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)  পাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।  

তিনি বলেছেন, এনআইডি কার্ডের জন্য প্রবাসীদেরকে দেশে আসতে হবে না।

এজন্য রেপিট ট্রাইবুন্যাল করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা এখনো পাস হয়নি। পাস হলে অনেক সমস্যা সহজেই সমাধান হবে।
 
মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের জন্য ভিন্ন সুবিধার কথা চিন্তা করে গত ২৭ ডিসেম্বর মন্ত্রীসভায় প্রবাসী দিবস পালন করার অনুমোদন করা হয়েছে। প্রতিবছর ৩০ ডিসেম্বর দিবসটি পালন করা হবে। এর মূল লক্ষ্য হবে প্রবাসীদের সব বলা এবং তাদের কাছ থেকে শোনা।
 
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরের উপকন্ঠ এয়ারপোর্ট সংলগ্ন একটি অভিজাত হোটেলে সিলেট কর অঞ্চল আয়োজিত সেরা করদাতাদের সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৮-১০ শতাংশে কর দেন। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। দেশে করদাতা সংখ্যা কম। জনসংখ্যার তুলনায় মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ কর দিচ্ছেন। অথচ নতুন আয়কর বাড়ানোর চেষ্টা কম। আয়কর যারা দেন, তাদেরকে বিরক্ত করা হয়। ৩ লাখের  উপরে যারা লেনদেন করবেন, বাসা বাড়িতে ভাড়া আদায় করেন, তাদের উপর ভ্যাট, ট্যাক্স আরোপ করা দরকার। ট্যাক্স দিলে দেশের উন্নয়ন হবে, আমার টাকায় প্রতিষ্ঠান হবে। কর না দিলে আমরা কোনো কিছুই প্রত্যাশা করতে পারি না। কর দেব না অথচ সুবিধা নেবো, এটা হতে পারে না।
 
তিনি বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, সেখানে আহরিত রাজস্বের অধিকাংশই আসে আয়করের প্রত্যক্ষ কর থেকে। আমেরিকায় আয় ৩০০০ ডলারের বেশি হলে প্রত্যেককে ট্যাক্স দিতে হয়। আর আইডি পেলেই ট্যাক্স রিটার্ন দিতে হবে। সব কিছু ট্যাক্স বেইসড। ট্যাক্স রিটার্ন কম, কিন্তু গিফট পেয়েছি।
 
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল জাতি গড়ে তুলতে আয়কর বিভাগকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। কেননা, মুষ্টিমেয় করদাতার ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে করনেট সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
 
দেশ গঠনে কর বিভাগের সাফল্য কামনা করে নতুন নতুন করদাতাদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানান তিনি। তাছাড়া সারা বিশ্বে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে জানিয়ে বলেন, কর আহরণে নতুন নতুন পলিসি গ্রহণ করতে হবে।
 
প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে বিড়ম্বনা পোহাতে হয় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সিলেটের মতো চট্রগ্রাম ও কুমিল্লায়ও প্রবাসীরা রয়েছেন। প্রবাসীদের জমিজমা নিয়েও সমস্যায় কেবল সিলেটেই। যেটা চট্রগ্রাম ও কুমিল্লাতে নেই। সিলেটেই প্রবাসীদের জমিজমা, বাড়িঘর বেদখল হয়। সিলেটের মানুষ এতো খারাপ? ভাই-বোনের হক চুরি করে? প্রবাসীরা বিনিয়োগ করতে গেলেও্ বিড়ম্বনায় পড়েন।
 
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ পিপিএম,বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টির সিনিয়র সহসভাপতি।
 
সিলেট কর অঞ্চলের কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মর্তুজা শরিফুল ইসলাম।
 
বিশেষ অতিথিরা কর প্রদান পদ্ধতি আরও সহজ ও ডিজিটাল করার তাগিদ দেন। সর্বোচ্চ ও দীর্ঘসময় কর প্রদানকারী করদাতারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে করদাতাদের সুদৃশ্য ক্রেস্ট, সনদ, গিফট বক্স ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
 
সিলেট বিভাগের ৪ জেলা ও সিসিকের ৩৫ ব্যক্তিকে সেরা করদাতা সম্মাননা দেওয়া হয়।
 
সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলা থেকে মোট ১০জন দীর্ঘমেয়াদী সর্বোচ্চ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ১৫জন সর্বোচ্চ ৫ জন নারী, ৫ জন তরুণ।
 
পুরুষ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। সিসিক থেকে দীর্ঘ সময় ধরে কর প্রদানকারী দুজন আব্দুল খালিক ও ধ্রুব জ্যোতি শ্যাম। এছাড়া সর্বোচ্চ তিনজন করদাতা হলেন- এ কে এম আতাউল করিম, রাখাল দে ও এম নুরুল হক সোহেল। সর্বোচ্চ করদাতা নারী হলেন হাছিনা আক্তার চৌধুরী।  তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ করদাতা হলেন মুহাম্মদ শাহ আলম।
 
হবিগঞ্জ জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন মো. আব্দুল মালিক এবং মো. আজমান আলী। সর্বোচ্চ করদাতা মিজানুর রহমান শামীম, মো. গোলাম ফারুক ও মো. দুলাল মিয়া। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন শাবানা বেগম এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. এমদাদুল হাসান।
 
সুনামগঞ্জ জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন ডা. মো. গোলাম মোস্তফা ও হিমাংশু আচার্য্য। সর্বোচ্চ করদাতা মো. আতিকুর রহমান, অমল কান্তি চৌধুরী ও মো. মোর্শেদ আলম বেলাল। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন দিলশাদ বেগম চৌধুরী এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত মো. জহিরুল হক।
 
মৌলভীবাজার জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন ডা. সত্য রঞ্জন দাস ও সাধন চন্দ্র ঘোষ। এছাড়া সর্বোচ্চ করদাতা তিনজন মো. মুহিবুর রহমান, কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও জালাল আহমেদ। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন সান আরা চৌধুরী এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. তানভীর চৌধুরী
 
সিলেট জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আহমেদ ও আলী আহমেদ কুলু। এছাড়া সর্বোচ্চ করদাতা তিনজন মো. আবুল কালাম, মোহাম্মদ আবু তাহের ও মোহাম্মদ ফরহাদ। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন মোসাম্মৎ আফছানা আক্তার এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত মো. খাইরুল হাসান।
 
অনুষ্ঠানে সিলেট বিভাগের সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী করদাতা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
এনইউ/এসএ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।