ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মারামারি, ২ নারী আহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মারামারি,  ২ নারী আহত

পটুয়াখালী: জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পুলিশের সামনেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এতে দুই নারী আহত হয়েছেন।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন - ওই গ্রামের মো. ইউনুচ মৃধার মেয়ে মোসা. ঝুমুর বেগম (২৬) ও তার ছোটবোন রুবি আক্তার (২৩)। আহত দুজনকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

মারামারির ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী ঝুমুর মির্জাগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বপন কুমার ঘোষের আদালতে প্রতিপক্ষ নজরুল মৃধাকে প্রধান আসামি করে চারজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।  

আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আসামিদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

ঘটনার একটি ভিডিও দেখা গেছে, মির্জাগঞ্জ থানার এএসআই জসিম উদ্দিন রুবির সঙ্গে কথা বলছেন। এ সময় রুবি ভিডিও করলে তার (জমিম) সঙ্গে থাকা কনস্টেবল ইমরান মোবাইল ফোনটিতে থাবা দেয়। পরে ভিডিওটি কেটে যায়।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাবুয়া গ্রামের ইউনুচ মৃধা তার চাচাতো বোনের কাছ থেকে ২২ শতাংশ জমি কেনেন। সেই জমি নিয়ে প্রতিবেশী নজরুল মৃধার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরোধ চলছিল। ইউনুস মৃধার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ঢাকাতে বসবাস করেন।  

গত বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে তার দুই মেয়ে ঝুমুর ও রুবি বাড়িতে আসলে তারা জমির ধান কাটতে পারে ভেবে প্রতিপক্ষ নজরুল মৃধা থানায় গিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষ তর্কে জড়িয়ে পড়ে।  

এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই নজরুল মৃধা ও তার পরিবারের লোকজন ঝুমুর ও রুবিকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কিল-ঘুষি দিয়ে গুরুতর আহত করেন।  

এ বিষয়ে আসামি নজরুল মৃধা বলেন, ওই দুই নারী আমাদের উপর আগে আক্রমণ করেছিলেন। পরে আমরা তার প্রতিরোধ করেছি।

ভুক্তভোগী রুবি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমরা দুই বোন সকালবেলা ঢাকা থেকে বাড়িতে বেড়াতে আসি। পরে ওরা পুলিশ নিয়ে আমাদের বাসার সামনে এসে আমাদের গালিগালাজ করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে মারধর করছে। আমি ভিডিও করতে গেলে আমার গায়ে হাত দেয় তারা। পুলিশ আমাদের ঘরের দরজার তালা ও পেছনের জানালা ভেঙে মোবাইল ফোন নেওয়ার চেষ্টা করেছে। মোবাইল নেওয়ার জন্য কনস্টেবল ইমরান আমার হাত ধরে টানাটানি করেছেন। আমরা এর বিচার চাই।  

পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে এএসআই মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ওই দুই নারী ও তার পরিবার নজরুলদের জমির কাচা ধান কাটার পাঁয়তারা করছিল। নজরুলের স্ত্রী তহমিনা থানায় এসে অভিযোগ করলে আমরা তদন্তে সেখানে যাই। তখন উভয়পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ওই দুই নারী প্রতিপক্ষের উপর হামলা করে। এসময় আমরা তাদেরকে ছাড়িয়ে দেই।

মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এক পক্ষের ধান অন্যপক্ষ কেটে নিয়ে যাবে, এরকম একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। তখন উভয়পক্ষের নারীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে কোনো পক্ষ থেকেই মারামারির বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৭৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
এসএএইচ 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।