ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বরগুনায় বই পায়নি প্রাথমিকের ৬৪ হাজার শিক্ষার্থী 

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
বরগুনায় বই পায়নি প্রাথমিকের ৬৪ হাজার শিক্ষার্থী  বরগুনায় বছরের প্রথম দিন তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: পহেলা জানুয়ারি দেশব্যাপী বই উৎসব। বছরের প্রথম দিন প্রাথমিকের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নতুন বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বরগুনায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম- এই তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই তুলে দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বরগুনা সদর উপজেলাসহ ছয়টি উপজেলার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাড়া কেউ বই পায়নি। ফলে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নানা সঙ্কটের কারণে এবার বছরের প্রথম দিন সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সবাইকে বই পৌঁছে দেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, বরগুনা জেলায় মোট সাত’শ ৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যলয় রয়েছে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৫ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এরমধ্যে প্রাক প্রাথমিকে ২২ হাজার ১৩২ জন, প্রথম শেণিতে ২২ হাজার ৫৮৩ ও ২য় শ্রেণিতে ২২ হাজার ৬৯৮ জনসহ তিন শ্রেণিতে মোট ৬৭ হাজার ৪১৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত।

এছাড়া তৃতীয় শ্রেণিতে ২২ হাজার ৩১৬ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ২১ হাজার ৮৪৬ জন ও ২০ হাজার ৩০২জনসহ ৬৪ হাজার ৪০২ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এর বাইরেও অন্যান্য ক্যটাগরির বিদ্যালয়ে ১৭ হাজার ৫৪৪ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এরমধ্যে রোববার সকালে প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিন শ্রেণির মোট ৬৭ হাজার ৪১৭ শিক্ষার্থীকে বই দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ৬৪ হাজার ৪০২জন শিক্ষার্থীর কেউই বই পায়নি। বই নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে অভিভাবকসহ আমন্ত্রণ জানানো হলেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের। ইউটিডিসি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বই নিতে শিশুদের নিয়ে আসা একজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার সন্তান এবার তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিশুকে নিয়ে স্কুলে আসতে বলেছে নতুন বই দেবে। কিন্ত তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের বই না দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বই এলে খবর দেওয়া হবে, তখন এসে নিয়ে যাবেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বই বিতরণ হয়েছে। বামনা উপজেলার সদর ইউনিয়নে কিছু বিদ্যালয়ে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বিরতণ হয়েছে। বাকি সব ইউনিয়নের বিদ্যালয়ে সদরের মতোই প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বই বিতরণ হয়েছে। এছাড়া আমতলী উপজেলায় কোনো শ্রেণির বই বিতরণ হয়নি। পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলায় ও প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বই বিতরণ হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, মুদ্রন ও কাগজ সঙ্কটের কারণে এ বছর সব বই সময়মত পৌঁছায়নি। যে কারণে সব শিশুকে বছরের প্রথম দিন বই বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে বরগুনা জেলার সব বিদ্যালয়ে বই পৌঁছে দেওয়া হবে। আনুষ্ঠানিকতার কারণে আজ সব উপজেলায় কিছু বই বিতরণ করা হয়েছে।

বরগুনা জেলার প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বছরের প্রথম দিন আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্ত সেটা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা শিগগিরই সব শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৩
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।