ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি পরিচয়ে গাড়িতে তুলে টাকা লুট, গ্রেফতার ৫

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
ডিবি পরিচয়ে গাড়িতে তুলে টাকা লুট, গ্রেফতার ৫

ঢাকা: ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার (১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- পিযুষ সুর (২৭), মো. হারুন (৩৮), জোবায়ের হোসেন পারভেজ, আরিফ হোসেন (২৯) ও খোকন চন্দ্র দেবনাথ (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি কালো রংয়ের নোয়াহ্ মাইক্রোবাস, একটি সাদা রংয়ের প্রভোক্স প্রাইভেট কার, দুটি পুলিশের রিফ্লেক্টিং ভেষ্ট ও একটি হাতকড়া জব্দ করা হয়।

সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে এক ভুক্তভোগী রিকশাযোগে মতিঝিল সিটি সেন্টার থেকে অলিম্পিয়া বেকারির দিকে যাওয়ার পথে একটি কালো রংয়ের নোয়াহ্ গাড়ি তার গতিরোধ করে। এরপর ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার কাছে অবৈধ মালামাল আছে বলে দুই হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তার সঙ্গে থাকা চার লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।  

পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে রাজধানীর শাপলা চত্বর, ধোলাইপাড় টোলপ্লাজা, ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা, কুচিয়ামারা ব্রিজ হয়ে ঢাকা মাওয়া সড়কে পিডিএল ক্যাম্পের সামনে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি মাওয়ার দিকে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী এ বিষয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন। এতে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগও ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় কালো রঙের নোয়াহ্ গাড়িটি পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়। গাড়ির মালিক ও ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।  

হারুন অর রশীদ বলেন, এ চক্রটি পারস্পরিক যোগসাজশে প্রাইভেট কার নিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ঘোরাফেরা করে। এ সময় ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসা, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বের হওয়া এবং মানি এক্সচেঞ্জের ব্যক্তিদের টার্গেট করে। ব্যক্তি সনাক্তের পর তার পেছনে পেছনে গাড়ি নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়।  

ডিবি প্রধান আরও বলেন, গাড়িতে তুলে ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল কেড়ে নিয়ে সুবিধাজনক নির্জন স্থানে ফেলে যাওয়া হয়। এ চক্রটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এ চক্রের প্রধান শহীদুল ইসলাম মাঝি। তার বিরুদ্ধে সারাদেশে মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে শহীদুল ইসলাম মাঝিকে ডিবি পুলিশ একাধিকার গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ্দ করে। পলাতক শহীদুল ইসলাম মাঝিসহ তার অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান ডিবির এ কর্মকর্তা।

অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ডিবি বললেই আপনারা গাড়িতে উঠবেন না। প্রথমে তাদের পরিচয় জানবেন অথবা আপনাদের সন্দেহ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের সঙ্গে কথা বলবেন। যারা ডিবি অথবা অন্য যেকোনো সংস্থার নাম ব্যবহার করে অপরাধ করে আসছেন, আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি। অনেকের নাম আমরা পেয়েছি তাদেরকে গ্রেফতার করবো। তবে আপনাদেরও সচেতন থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।