ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রেললাইনে শীতবস্ত্রের বাজার, ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
রেললাইনে শীতবস্ত্রের বাজার, ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রেললাইনের উভয় পাশে বসেছে শীতবস্ত্রের বাজার। শীত বাড়লে বাজারের পরিধিও বাড়ে।

বাড়ে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠা ওই অস্থায়ী বাজারের কারণে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

রেল সূত্র জানায়, ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে রেললাইনের উভয় পাশের ২০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা গড়ে তোলা যাবে না। ওই জায়গা জুড়ে সার্বক্ষণিক ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকে। রেললাইনের পাশে দখল তো দূরের কথা জনমানুষ চলাচল, গরু- ছাগল বেঁধে রাখাও নিষিদ্ধ। অথচ সৈয়দপুর শহরের রেলপথ এলাকায় প্রতিদিন অবৈধ দখল বাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর ছোট ঘোমটি (২নং রেলগেট) থেকে দক্ষিণে বড় ঘোমটি হয়ে চাল হাটি আউটার সিগন্যাল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রেলপথ এলাকা দখল হয়ে গেছে। এর বেশির ভাগ জায়গা জুড়ে চলছে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা। এতে মিলছে সোয়েটার, ব্লেজার, জ্যাকেট, ট্রাউজার, মেয়েদের কার্ডিগান, ইনার, মাফলার, মোজা, দস্তানা ও শিশুদের বিভিন্ন রকম পোশাক।  

ছোট ঘোমটির কাছে মীর অপু (৪০) গড়ে তুলেছেন বিশাল এক দোকান। সামিয়ানা টাঙানো দোকানটিতে পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের গরম কাপড়। মেয়ের জিন্স, হুডি ও সোয়েটার। দোকানটিতে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়।  

দোকানি জানান, শীত বাড়লে বিক্রি ভালো হয়। শীত কমলে বেচাকেনাও কমে যায়। সময় ভালো গেলে প্রতিদিন বেচাকেনা নিচে ১০ হাজার থেকে উপরে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ধরনের তিন শতাধিক পুরাতন কাপড়ের দোকান রয়েছে রেললাইন এলাকায়। ওই মার্কেটে কাপড় কিনে গরিব মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।  

রেললাইনের পাশে সামিয়ানা টাঙিয়ে ব্যবসা করছেন নাইম হোসেন (৩৫)। তিনি বলেন, পৌরসভার কোনো হকার্স মার্কেট নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়ে রেললাইনের পাশে অবৈধ দোকান নিয়ে বসেছি। তবে আমাদের মালামাল কোনো কিছুই অবৈধ নয়।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, রেললাইনেরে পাশে ব্যবসা করার জন্য ঘোমটি ঘরের গেটম্যানকে প্রতিদিন ২০ টাকা, রেল পুলিশকে ২০ টাকা, পৌর কর্মচারীকে ২০ টাকা, মাস্তানি চাঁদা ২০ টাকা দিতে হয়। কেউ কেউ উচ্ছেদের ভয় দেখেও চাঁদা তোলেন।  

সৈয়দপুর রেলওয়ে মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম রতন বলেন, রেললাইনের পাশে হাট-বাজার দোকানপাট গড়ে তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যা রেললাইনে একেবারে নিষিদ্ধ। এতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান বলেন, রেললাইনের উভয়পাশে গড়ে উঠা দোকানপাটের কারণে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উচ্ছেদ করার পর আবারও বসেছে দোকানপাট। তবে এবার চিরস্থায়ী উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।