ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন সংসদে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন সংসদে

ঢাকা: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান কমে গেছে এবং উচ্চশিক্ষা নিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী চাকরি পাচ্ছে না। সংসদে এমন অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলের সদস্যরা।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুনীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ করেন।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে পাসের জন্য শিক্ষামন্ত্রী মেহেরপুরের মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিল উপস্থাপন করলে বিরোধী দলের সদস্যরা জনমত যাচাইয়ে প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব অভিযোগ করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।  

আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু ইউজিসির সুপারিশের অনেকাংশই বাস্তবায়ন করা হয় না। ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেছেন, মন্ত্রণালয় যে ইউজিসির সব সুপারিশ আমলে নেয় না, তা আমি আগের থেকেই বলে আসছি।  

তিনি বলেন, অনিয়ম ও দুনীতির তদন্ত করতে গিয়ে ইউজিসির কর্মকর্তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়, হুমকির শিকার হতে হয়। এর পরও ঝুঁকি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য  সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠান। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সেই প্রতিবেদন চাপা পড়ে থাকে। মাঝখান থেকে ওই তদন্ত কর্মকর্তা বিপাকে পড়েন।  
 
ইউজিসির প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এতে বলা হয়েছে গত ১০ বছরে অন্তত ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগের অনিয়ম ও আর্থিক দুনীতির অভিযোগ পাওয়ার পর ইউজিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়েও পাঠান। কিন্তু ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো প্রতিবেদনেরই আলোর মুখ দেখায় না মন্ত্রণালয়।

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রী-মন্ত্রণালয় এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুনীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা করে না। ইউজিসির প্রতিবেদনে সেটি বলা হয়েছে। আরেকটি বিষয় হলো উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোতে সংসদ সদস্যদের সভাপতির পদ থেকে বাদ দিয়ে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের পর শিক্ষামন্ত্রী এই সংসদে বার বার বলেছিলেন, আপিল করবেন। আপিল করবেন, শুনানি হবে, শুনতে শুনতে একাদশ সংসদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, গতানুগতিক বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে আমাদের চলছে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৯ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার থাকে। বাকি যে ৭- ৮ ভাগ থাকে তারা কারিগরি শিক্ষা নেয়, মাত্র ১৫-২০ ভাগ চাকরি পায়। তারা চাকরি পাচ্ছে গড়ে মাত্র ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে অর্থাৎ প্রতিদিন এক হাজার টাকা, দিনমজুরের বেতনের মতো।  

তিনি বলেন, আমাদের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন প্রয়োজন, সেখানে আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। ৮-১০ লাখ লোক বিদেশে যায়। সেই ৮-১০ লাখ লোক বিদেশে যাওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কী করেছে, কিছুই করেনি। তাদের ভাষা শেখায়নি, তাদের পাসপোর্ট জ্ঞান, ইমিগ্রেশন জ্ঞান দেওয়া হয়নি। এ আইনে কিছু নেই। আমাদের যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় হবে সেগুলোতে এসব বিষয় দেখা দরকার।

জাতীয় পার্টির রওশনারা মান্নান বলেন, দেশে উচ্চ শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে, সেগুলোর মান কমে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক সময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই মান নেই, পড়ে গেছে। অবশ্য মাধ্যমিকে কিছুটা মান বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩

এসকে/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।