ঢাকা, রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পরকীয়ার কারণেই বাবার হাতে খুন হয় শিশু ঈশা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
পরকীয়ার কারণেই বাবার হাতে খুন হয় শিশু ঈশা

নাটোর: বাবার অনৈতিক কার্যকলাপের সময় বিরক্ত করায় শিশু কন্যা ইরিন সুলতানা ঈশাকে খাপ্পড় দিয়ে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাবা ইলিয়াস আলী। ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহটি বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।

 

নাটোরের লালপুর উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু ইরিন সুলতানা ঈশা হত্যা রহস্য উদঘাটন করার পর পুলিশ এ ঘটনায় তিনজনের নামে চার্জশিট দিয়েছে।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের সাধুপাড়া গ্রামের মো. ইনছার আলীর ছেলে মো. ইলিয়াস আলী (৩১), পরকীয়া প্রেমিকা প্রতিবেশী মো. নূর উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. শোভা খাতুন (৩৫) ও মো. ইসলাম আলী মোল্লার স্ত্রী মোছা. শেফালী বেগম (৪৮)।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক ও এসআই মোল্লা সোহেল মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, গত ২০২২ সালের ১৫ মার্চ সকালে বাবা ইলিয়াস আলীর সঙ্গে মেয়ে ইরিন সুলতানা ঈশা বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিবেশী শোভা খাতুনের বাড়িতে যান। এসময় মেয়েকে সিড়ির ওপর দাঁড় করিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টাকালে মেয়ে ঈশা বাবাকে ধরে টানাটানি শুরু করে। এ সময় বাবা ইলিয়াস আলী উত্তেজিত হয়ে ঈশাকে থাপ্পড় দেন। শিশু ঈশা মাটিতে পড়ে কান্নার চেষ্টা করলে বাবা মেয়ের গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ইলিয়াস আলী ঈশার মরদেহ কোলে নিয়ে প্রতিবেশী মোছা. শেফালী বেগমের বাড়ির সামনে বেলকোনির সিঁড়ির ওপর ফেলে চলে যান।

এ সময় শেফালী বেগম বের হয়ে দেখেন ঈশার মরদেহ। পরে তিনি বাড়ির বাইরে টয়লেটের মধ্যে মরদেহ রেখে দেন। কিছুক্ষণ পর ঈশার মা মেয়েকে ডাকাডাকি ও খোঁজাখুঁজি করলে একপর্যায় শেফালী বেগম ভয়ে মরদেহটি বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেন। ঈশার মা মোছা. আখি খাতুন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে স্বামী ইলিয়াস আলীকে মোবাইলে জানান।  

ইলিয়াস আলী বাড়িতে এসে ঘটনার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় মসজিদের মাইকে প্রচারনা চালান এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।  

এদিকে প্রতিবেশীরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে ডোবায় বস্তাবন্দী মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।  

ওসি আরও বলেন, এ এ ঘটনায় পুলিশ দীর্ঘ তদন্তের একপর্যায়ে পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে শোভা খাতুনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে। বর্তমানে শোভা খাতুন জামিনে রয়েছেন। অপর দুই আসামি নিহত ঈশার বাবা মো. ইলিয়াস আলী ও মোছা. শেফালী বেগম পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৩ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।