ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গণতন্ত্র সুরক্ষিত করে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
গণতন্ত্র সুরক্ষিত করে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন করা- এটাই আমাদের লক্ষ্য।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কালশী মোড় সংলগ্ন বালুরমাঠে ইসিবি চত্বর মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে নির্মিত ফ্লাইওভারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলব, এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। কাজেই গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। এই ঢাকা সিটিও স্মার্ট সিটি হবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেজন্যই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ’

সরকার প্রধান বলেন, আমরা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। আর সেটা করতে পেরেছি বলেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। আজকে বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা আছে; কেউ আর বাংলাদেশকে হেয় করতে পারবে না; নিচু চোখে দেখতে পারবে না। বরং এখন যারা বিদেশে যান, তারা দেখতে পান, বাংলাদেশের মানুষকে সবাই সমীহ করে। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে; এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটি কথা বলতে চাই, আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে। অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, আমরা ২০০৮-এর নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে এসেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছি বলেই আজকে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করতে পেরেছি। জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছে। এই মর্যাদা বাস্তবায়ন করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালে, আগামীর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।

২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি কয়টি আসন পেয়েছিল, সে কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেন, বিএনপি অনেক কথা বলে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা তো মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছিল; আর একটা উপ-নির্বাচনে। অর্থাৎ ৩০০ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছিল। কাজেই আমরা দেশের উন্নয়ন করে মানুষের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করে জনগণের ভোটেই বারবার সরকারে এসেছি।  

এ ব্যাপারে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছে। দেশের মানুষ কিন্তু ভোট সম্পর্কে সচেতন। কেউ যদি ভোট চুরি করে, এদেশের মানুষ কিন্তু মেনে নেয় না। আপনাদের মনে আছে, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ক্ষমতায় থেকে একটা নির্বাচন করেছিল, জনগণের ভোট চুরি করে খালেদা জিয়া নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিল। জনগণ কিন্তু মেনে নেয়নি। মাত্র দেড় মাসের মাথায় খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল, জনগণের আন্দোলনের ফলে। ভোট চোরকে কখনো জনগণ গ্রহণ করে না। ’

অনাবদী জমিগুলোকে ফেলে না রেখে ফসল উৎপাদন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখা যাবে না। ফলস উৎপাদন করতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না, কারো মুখাপেক্ষী হবে না। আমরা নিজের ক্ষেতে ফসল ফলাব, নিজের দেশকে উন্নত করব। কারো কাছে হাত পেতে চলব না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। আমরা সম্মানের সঙ্গেই বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। ’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে আটকা পড়া উর্দুভাষী নাগরিকদের জন্য ফ্লাট নির্মাণ করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান। সেই সঙ্গে কালশী বালুর মাঠকে বিনোদন পার্ক করারও ঘোষণা দেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে নির্মিত ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম।

ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী সার্কেলের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৩৩৫ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি নির্মিত হয়েছে। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় ইসিবি স্কোয়ার থেকে কালশী পর্যন্ত ৩.৭০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। একনেক ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়।

এক হাজার ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি সম্পন্ন করেছে বিএনসিসি ও বাংলাদেশ আর্মি (২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড)।

প্রকল্প বিবরণী অনুযায়ী, ফ্লাইওভারটি ইংরেজি ‘ওয়াই’ অক্ষরের মতো। এ প্রকল্পে যাত্রীদের ভ্রমণ সহজ করার লক্ষ্যে আগের চার লেন বিশিষ্ট সড়কগুলোকে ছয় লেনে উন্নীত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এমইউএম/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।