ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কালশী ফ্লাইওভারে ভোগান্তি দূর হয়েছে মিরপুরবাসীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
কালশী ফ্লাইওভারে ভোগান্তি দূর হয়েছে মিরপুরবাসীর চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে কালশী ফ্লাইওভার -ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: কালশী উড়াল সেতু খুলে দেওয়ার দূর হয়েছে মিরপুরবাসীর সকাল-বিকেলের ভোগান্তি। এখন আর উত্তরা, বিমানবন্দর, বনানী ও গুলশানমুখী মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে আর কালশী মোড়ে অপেক্ষা করতে হবে না, পোহাতে হবে না জরুরি কাজের পথে অনিবার্য ভোগান্তি।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর এই ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার সাক্ষী হতে আসা হাজারো মানুষের অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠেছে সেই উচ্ছাস।  

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর মানুষের ঢল নেমেছে ফ্লাইওভারের উপর-নিচে। চলছে বিভিন্ন রকমের গাড়ি। নান বয়সের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা মেতেছেন উৎসবের আমেজে। মোবাইল ফোনে সেলফি অনুসঙ্গ যোগ করেছে নতুন মাত্রা। মনে হয় যেন কোনো ঈদ, পূজা বা ফাগুন কিংবা বর্ষবরণের আনন্দে মেতেছেন তারা। আনন্দ নিজেরদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন কালশী কেন্দ্রিক বিভিন্ন রকম স্মৃতি, সুখ-দুঃখের গল্প করে।

তাদেরই একজন পচাত্তর ঊর্ধ্ব নুরুল ইসলাম। দুপুরে ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর তিনিও মেতেছেন আনন্দে। পরিচিত যার সঙ্গে দেখা হচ্ছিল তার সঙ্গেই সাথে কথা বলছিলেন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সকাল হলেই এ এলাকায় শত শত গাড়ির জট হতো, মানুষ জরুরি কাজে বের হয়ে এখানে এসে যেন বন্দি হয়ে যেতেন। ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর এখন সবাই নিমিষেই সাঁই সাঁই করে চলে যাচ্ছে।

এক সময়ের বিপদজ্জনক স্থান হিসেবে পরিচিত কালশীর স্মৃতিও হাতড়ে ফিরলেন তিনি। বললেন, তখন তো আসাই যেত না। এখানে মানুষকে ধরে এনে খুন করা হতো। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের এই সবই এখন স্মৃতি। রাস্তা ছিল ভাঙাচোরা, কোনটা ফুটপাত আর কোনটা রাস্তা বোঝা যেত না। এখন রাস্তা ভাত রেখে খাওয়া যাওয়ার মতো পরিষ্কার হয়েছে। মানুষ যাবে, আর আসবে।    

ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর দেখতে এসেছেন আমেনা খাতুনও। তিনি বলেন, গাড়িগুলো অনেক সময় ধরে জ্যামে আটকে থাকতো। নিজেকেও কয়েকবার ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। গাজীপুর, উত্তরা-বিমানবন্দর, বনানী, গুলশান  এমনকি তেজগাঁও যেতে হলেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। মনে হতো আমরা যেন উপেক্ষিত সিটমহলের বাসিন্দা; দেখার কেউ নেই। মূল সড়ক বা জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হতো। মিরপুর ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর সেকশনের মানুষ এখন এই ফ্লাইওভার ব্যবহার করে সহজেই গন্তবেই পৌঁছতে পারবে। এখন মনে হচ্ছে নিশ্চই আমাদের দেখার কেউ ছিল। আর এ কারণেই দূর হয়েছে ভোগান্তি।    

ইংরেজী বর্ণ ওয়াই আকৃতির মূল ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার (১ দশমিক ৭ কিলো মিটার)। সেনানিবাসের ইসিবি চত্ত্বরের দিকে থেকে একটি অংশ চলে গেছে মিরপুর ডিওএইচএসে। অপরটি কালশীতে সাংবাদিক আবাসিক এলাকার পাশে নেমেছে।  

ফ্লাইওভারটি সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা। ১ দশমিক ৭ কিলোমিটারে ফ্লাইওভারের প্রকল্পে সড়ক, ফুটপাত এবং ড্রেনের উন্নয়ন কাজও করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাত প্রশস্তকরণ, সড়ক বিভাজক তৈরি এবং ড্রেন নির্মাণ ও কমিউনিকেশন ডাক্টও তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই প্রকল্পটির স্বত্বাধিকারী সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
জেডএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।