ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রিয়াদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
রিয়াদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ঢাকা: সৌদি আরবের রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।  

দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দূতাবাস চত্বরে পতাকা অর্ধনমিত করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

দূতাবাসে স্থাপিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সৌদি আরব সফররত যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। এরপর রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এছাড়া রিয়াদের বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল গভীর শ্রদ্ধায় রফিক, সালাম, বরকত, শফিউরসহ সব ভাষাশহীদদের স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের সময় বার বার গ্রেফতার হয়েছেন, ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন।

প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কাটিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। দেশের উন্নয়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল প্রকল্পসহ নানাবিধ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।  

প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দেশের প্রতিটি স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশ স্বাধীন হবার পর বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের জন্য কাজ করেছিলেন, সব সরকারি দাপ্তরিক কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

রাষ্ট্রদূত প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করে দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সৌদি আরবে অবস্থিত ছয়টি বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।  

রাষ্ট্রদূত ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রবাসীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।  

দূতাবাসের কাউন্সিলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রিয়াদের ব্যবসায়ী এম আর মাহবুব, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, ডা. মহসিন ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম।

একুশের স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সাহিত্যিক শাহজাহান চঞ্চল।

এদিন বিকেলে দূতাবাসে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, সৌদি অফিশিয়ালদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।