ঢাকা: বাংলাদেশে খাদ্যের সাপ্লাই চেইন দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত ‘এলডিসি হতে উত্তরণে বাংলাদেশের কৃষি: অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক বি এস টি নাগরিক সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মোমেন বলেন, কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুগান্তকারী অবস্থানে আছে। প্রায় ৪০ লাখ টন খাদ্য বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। বাংলাদেশে চাহিদার দ্বিগুণ আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা সেগুলো ঠিকমতো এক্সপোর্ট করতে পারছি না। এক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আগামীতে এই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে যাতে আমরা এই অবস্থার উন্নতি করতে পারি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ এই উন্নত কৃষির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করে। আমাদেরও আগামীতে এ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে, যাতে করে আমরা কৃষি থেকে অধিকতর আয় করতে পারি। দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করার যথেষ্ট সুযোগ আমাদের আছে।
বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে ব্যাপক ঘাটতি আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো বিদেশ থেকে পটেটো চিপস কিনি। কারণ, আমরা সেই ধরনের অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি করতে পারি নাই। এই প্রসেসিংয়ের অভাবে আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারি না। তবে এখানে কিছু অধিকতর বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, আমরা এলডিসি অর্জন করতে যাচ্ছি ২০২৬ সালে। তবে আমি আনন্দিত যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ আমাদের বলেছে, তারা ২০২৯ সাল অর্থাৎ তিন বছর পর্যন্ত আমাদের সব সুযোগ সুবিধা দেবে। এ বিষয়ে কানাডার উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তাই আমি বলতে চাই, উন্নত কৃষির ক্ষেত্রে আমাদের মার্কেটিং এবং সাপ্লাই চেইনে কাজ করার সুযোগ আছে।
প্রবাসীদের জমিতে চাষাবাদ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, পুরো বিশ্বে এক কোটি ২০ লাখ প্রবাসী বাঙালি আছে। বাংলাদেশে যথেষ্ট পরিমাণ জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকে। আগে আমরা জমিতে একটি ফসল চাষ করতাম। এখন একের অধিক ফসল করি। কিন্তু প্রবাসীদের জমি কেউ চাষ করে না। কারণ প্রবাসীরা তাদের জমি আত্মীয়দের দিতে ভয় করে। একইসঙ্গে অন্য কাউকে দিতেও তারা ভয় পায়। সরকার যদি তাদের জমিতে চাষাবাদ করে সে ক্ষেত্রে তাদের ভয় কম থাকে। আমি অনেক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ভাষ্য, সরকার যদি জমি নেয়, তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। আমি মনে করি এ বিষয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনার সুযোগ আছে।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান লিটু।
কি-নোট উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট এর সাধারণ সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীর।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ সভাপতি প্রফেসর ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব ড. মো নেয়ামুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
ইএসএস/আরএইচ