শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়িতে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আহম্মদ আলীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪, জামালপুর।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে গাজীপুর জেলার সদর থানাধীন গাজীপুরা এলাকায় আসামির মেয়ের বসতঘর থেকে আহম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে র্যাব-১৪ সদস্যরা।
আহম্মদ আলীকে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতার আহম্মদ আলী নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঁশকান্দা গ্রামের মৃত হাবিল উদ্দিন ফকিরের ছেলে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ভিকটিম একজন হত দরিদ্র ঘরের সন্তান। ভিকটিমের মা ভিক্ষা করে ও বড় ভাই দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আহম্মদ আলী ভিকটিমের প্রতিবেশী এবং চার সন্তানের জনক। প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিমের মা ও বড় ভাই জীবিকার তাগিদে কাজে চলে যায়। ভিকটিম তার মাকে খুজতে বাঁশকান্দা বাজারে গিয়ে মাকে না পেয়ে একা বাড়ীতে ফেরত আসার সময় আসামি তার পিছু পিছু বাড়িতে আসে। ঘটনার দিন বাড়িতে কোনো লোকজন না থাকায় আহম্মদ আলী ভিকটিমের বসতঘরে খাটের উপর বসে এবং তাহার কাম লালসা চরিতার্থ করার জন্য ভিকটিমকে টাকা পয়সার ও খাবারের লোভ দেখাইলে ভিকটিম আসামির কু-প্রস্তাবের অস্বীকৃতি জানায়। তারপর একপর্যায়ে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গত ২৭ আগষ্ট ২০১৪ সালে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে ভিকটিম ডাকচিৎকার শুরু করে। ঐ সময় ভিকটিমের মা বাড়ীতে এসে আসামিকে ধর্ষণরত অবস্থায় দেখলে আসামি ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের মায়ের ডাক-চিৎকারে আশেপাশের আরও লোকজন এসে ভিকটিমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন।
এ ঘটনায় বড় ভাই মো. আনসার আলী বাদী হয়ে আহম্মদ আলীকে আসামি করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকেই আহম্মদ আলী আত্মগোপনে চলে যায়। আসামি পলাতক থাকা অবস্থায় দীর্ঘ ৮ বছর যাবত নিজের পরিচয় গোপন করে গাজীপুর এলাকায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় ও বাসাবাড়িতে আরবি শিক্ষকতা করে আসছিলেন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর গত ১১ অক্টোবর ২০২১ সালে আসামি আহম্মদ আলী উরফে কাশরাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারার অপরাধে সন্দেহাতীতভাবে দোষি সাবস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ অনাদয়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এসএম