ঢাকা: পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বন এবং বন্যপ্রাণীকুল বিপন্ন হলে মানবসভ্যতাও বিপর্যস্ত হবে, তাই মানব সভ্যতার অস্তিত্বের স্বার্থেই বন এবং বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রমকে সফল করতে সবাই সম্মিলিতভাবে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণে কাজ করতে হবে।
রোববার (৫ মার্চ) বন অধিদপ্তরে ‘সকলের অংশগ্রহণ, বন্যপ্রাণী হবে সংরক্ষণ’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার; সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমদ।
বনমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সরকার বিভিন্ন যুগোপযোগী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে, সংবিধানে ১৮ ক অনুচ্ছেদ সন্নিবেশন করা হয়েছে, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এবং বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকার দেশে ২৪টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ১৯টি জাতীয় উদ্যান, ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা, ৩টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ৩টি ইকোপার্ক, ২টি শকুন নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করেছে। এছাড়া ২টি রামসার সাইট ও ৬টি ফ্লাইওয়ে সাইট রয়েছে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বন্যপ্রাণী অপরাধ উদঘাটনে (তথ্য প্রদানকারী) পুরস্কার প্রদান বিধিমালার আওতায় তথ্যদাতাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। ‘বন্যপ্রাণীর আক্রমণে জানমালের ক্ষতিপূরণ বিধিমালা-২০২১’ অনুযায়ী নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৩ লাখ এবং আহত ব্যক্তির পরিবারকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হচ্ছে। বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিতদের জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন-২০১২’ নীতিমালা অনুযায়ী পুরস্কৃত করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরবনের অপরাধ মনিটরিং ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, সুফল প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ফান্ড প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশে হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণে একটি অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন এবং এগুলোর বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে নন-ডেট্রিমেন্ট ফাইন্ডিংস তৈরি করা হয়েছে। দেশে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা, প্রকৃতিতে তাদের অবস্থা ও আবাসস্থলের হুমকিগুলো জানার জন্য ‘রেড লিস্ট অব বাংলাদেশ ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘসহ অন্যান্য প্রাণী সংরক্ষণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৩
টিএ/জেএইচ