ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক টুকরো দড়ির সূত্র ধরে বের হলো হত্যা রহস্য, খুনিরা গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
এক টুকরো দড়ির সূত্র ধরে বের হলো হত্যা রহস্য, খুনিরা গ্রেফতার

সিলেট: সিলেটে সহোদর হত্যায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন জাহাঙ্গীর আলী (২৭) নামের এক যুবক। সেই মামলার রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে পুলিশ দেখে, ভাই হত্যায় অভিযুক্ত আসামি বাদী জাহাঙ্গীরই।

ভাই সাজ্জাদ আলী হত্যা মামলার বাদী থেকে খুনের আসামি এখন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসার ছাদে ঝুলন্ত কাটা নাইলনের অবশিষ্ট রশির টুকরোর সূত্র ধরেই সিলেটে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই সিরাজ আলীও (৪২)। নিহত ও তার এ দুই সহোদর সিলেট সদর উপজেলার বস্তন্তরগাঁও এলাকার মৃত ছোরাব আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার অন্যজনের নাম শাহাজান (৩৯)। লক্ষীপুর জেলা সদরের রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে তিনি। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা খসরু মিয়ার কলোনিতে থাকেন তিনি।  

তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত জানিয়ে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন জাহাঙ্গীর ও সিরাজ।

মূলত: জমির ভাগবাটোয়ারায় নিয়ে চাপ সৃষ্টি করলে প্রবাসফেরত সাজ্জাদ আলীকে পরিকল্পিকভাবে হত্যা করেন সহোদররা।

বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।  

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বরইকান্দি সড়কে বশর মিয়ারন অটোরাইস মিলের সামনে নদীর তীর থেকে অজ্ঞাত যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে জাহাঙ্গীর আলী জানান, এ লাশ তার ভাই সাজ্জাদ আলী (৩৫)। ২২ ফেব্রুয়ারি বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় অজ্ঞাত আসামি দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর।

হত্যা রহস্য উন্মোচনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মরদেহের মাথার পেছনে ধারালো ও বাম গালে অস্ত্রের কোপ ছিল। তদন্তে নেমে নিহত সাজ্জাদের ঘরে গিয়ে তার ব্যবহৃত কোনো কাপড় পাওয়া যায়নি। বাসার ছাদে কাপড় শুকানোর দড়ির কিছু অংশ সংগ্রহ করে পুলিশ। যে দড়ি নিহতের হাত-পা বাঁধার দড়ির সঙ্গে মিলে যায়। এই সূত্রে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলীকে থানায় ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সহোদরকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র গ্রামের কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।  

জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্যমতে শাহাজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  

জিজ্ঞাবাদে তারা জানতে পারেন, সাজ্জাদ ৫ মাস আগে বিদেশ থেকে আসেন। তারা একই ঘরে থাকলেও আলাদা রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতেন সাজ্জাদ। মূলত; জমিজমার ভাগবাটোয়ারায় নিয়ে চাপ সৃষ্টি করলে প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলীকে পরিকল্পিকভাবে হত্যা করেন সহোদররা।

সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুহেল রেজা পিপিএম বলেন, প্রবাসফেরত সাজ্জাদ আলীকে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যা করা তারই ভাইয়েরা। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর আলী ও সিরাজ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  

এসএমপি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশে কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২৩
এনইউ/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।