ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে এলো চুরি চক্র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে এলো চুরি চক্র

ঢাকা: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম (১৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)।

র‌্যাব জানায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগ এলাকার ওরিয়েন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত আজিজুল তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়।

দিনমজুর বাবাকে সহায়তা করতে পড়াশোনার পাশাপাশি ইজিবাইক চালাত সে। যা দিয়ে পরিবারকে সাহায্য করার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতো আজিজুল।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি যাত্রীবেশে ইজিবাইক চোর চক্রের খপ্পরে পড়ে খুন হয় আজিজুল। ক্লুলেস এ ঘটনায় ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় ১১ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০।

গ্রেফতাররা হলেন- সাকিব (১৯), সজীব (১৯), আরমান (২০), আরাফাত (১৯), হৃদয় (২০), সাইফুল (২২), সজীব (২৪), জিতু (১৯), ইব্রাহীম (১৯), রায়হান গাজীকে (১৯) ও আজিজুর রহমান (৪৫)।

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

তিনি জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি আজিজুল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানা যায়, অজ্ঞাত ৪-৫ জন আজিজুলকে হত্যা করে তার ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে একটি গ্যারেজের পেছনে কলাগাছের সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আজিজুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১০। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ও পটুয়াখালী এলাকা থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আজিজুল তার প্রতিবেশী শিশু রবিউলকে (১০) সঙ্গে নিয়ে ইজিবাইকসহ ইকুরিয়া আন্ডারপাসে অবস্থান করছিল। এ সময় সাকিব ও আরমান সারিঘাট যাওয়ার কথা বলে ইজিবাইকে ওঠে।

সারিঘাট যাওয়ার পথে হাসনাবাদ এলাকায় পৌঁছালে আরাফাত, সজীব ও রায়হান ইজিবাইকে ওঠে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মাঝপথে থামিয়ে আজিজুলকে একটি বাস তৈরির গ্যারেজের পেছনে নিয়ে যায়। এ সময় ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আজিজুল বাধা দেয়।

আরাফাত, আরমান ও রায়হান মিলে আজিজুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর তারা বাঁচার জন্য নিজেদের মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে ফেলে।

পরে হৃদয়, জিতু ও ইব্রাহিম ছিনতাইকৃত ইজিবাইকটি হত্যাকারীদের কাছ থেকে গ্রহণ করে সাইফুলের কাছে হস্তান্তর করে। সাইফুল থেকে সজীবের হাত ঘুরে ইজিবাইকটি আজিজুরের কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, গ্রেফতাররা বিভিন্ন সময়ে ইজিবাইক, অটোরিকশা ভাড়া করে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে ইজিবাইক, অটোরিকশা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়ও তারা একটি ইজিবাইক ছিনতাই করে। গ্রেফতারদের নামে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।