ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বসুন্ধরা সিটিতে সন্ত্রাসী হামলা-অগ্নি নির্বাপন মহড়া অনুষ্ঠিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
বসুন্ধরা সিটিতে সন্ত্রাসী হামলা-অগ্নি নির্বাপন মহড়া অনুষ্ঠিত

ঢাকা: ফাল্গুনের এক দুপুরে আকাশে ছিল ঝকঝকে রোদ। হঠাৎ রাজধানীর অন্যতম শপিং কমপ্লেক্স বসুন্ধরা সিটির বেসমেন্ট লেভেল-১ এর ডে কেয়ার সেন্টার থেকে ভেসে আসছিল বাঁচাও, বাঁচাও চিৎকার।

২-৩ মিনিটের ম ধ্যে সেখানে তিন থেকে চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দুষ্কৃতিকারীর একটি দল প্রথমে হামলা চালায় ডেকেয়ারে। সেখানে ঢুকতেই দারোয়ানকে গুলি করে হত্যা করে তারা। এছাড়া আহত হন এক নারী। ওই নারী আহত অবস্থায় বসুন্ধরা সিটির কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। তার দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই চলে আসে বসুন্ধরা নিরাপত্তা বাহিনী ও ডগ স্কোয়াড। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে দুই দুষ্কৃতিকারী নিহত হন। ডেকেয়ার সেন্টারের শিশুদের উদ্ধার করতে সেখানে পাঠানো হয় ডগ স্কোয়ার্ডের দুইটি কুকুর। সেখানে দুই দুষ্কৃতিকারী আত্মসমর্পণ করেন।

অন্যদিকে বসুন্ধরা সিটির বেসমেন্ট লেভেল-২ এর কুকিং হাউসে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় আগুন লেগে যায়। বসুন্ধরা সিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীদের সঙ্গে দুষ্কৃতিকারীদের গোলাগুলি হয় সেখানে। নিহত হন দুই দুষ্কৃতিকারী। প্রায় ২০ মিনিটের চেষ্টায় কুকিং হাউজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বসুন্ধরা সিটির নিজস্ব ফায়ার ফাইটাররা। এ সময় ফায়ার ফাইটাররা অক্সিজেন সিলিন্ডার, ট্রলি ও হুইলচেয়ার নিয়ে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের উদ্ধার করেন, নিয়ন্ত্রণে আনেন আগুন। অগ্নিকাণ্ডে আহত হন তিনজন।

জানা গেছে, দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় বসুন্ধরা সিটির নিরাপত্তা বাহিনীর দুইজন সদস্য নিহত হন। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ছয় দুষ্কৃতিকারীর চারজন নিহত হন ও দুইজন আত্মসমর্পণ করেন। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে আহত হন তিনজন।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরের দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী, ডগ স্কোয়ার্ড ও ফায়ার ড্রিল নিয়ে এমন মহড়া চালানোর চিত্র দেখা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ঘটে যাচ্ছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এমন অপ্রীতিকর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্যই আয়োজন করা হয় এই মহড়ার।

মহড়া শেষে বসুন্ধরা সিটি মহা-ব্যবস্থাপক (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) বিসিডিএল, অব. মেজর মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বৈশ্বইক ও দেশব্যাপী বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় দেশে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে ও বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ হচ্ছে। এসব ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে এমন মহড়ার ব্যবস্থা করা। এ ধরনের মহড়া আমরা আমাদের রুটিন অনুযায়ী করে থাকি। বসুন্ধরা সিটির আমরা সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে চাই। এই সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে হলে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনো কিছু হলে, অন্যদের আগেই যেন আমরা লিড নিতে পারি। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও অগ্নি নির্বাপন এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে এই চিত্র তৈরি করেছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন, বসুন্ধরা সিটি বাংলাদেশের মধ্যে একটি নামকরা শপিং মল। এর সুনাম বিনষ্ট হোক আমরা চাইবো না। এ বিষয়ে আমরা অন্যদের থেকে অগ্রগামী থাকতে চাই। এ জন্যই আমরা এই মহড়ার ব্যবস্থা করেছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে অব. মেজর রবিউল বলেন, আমাদের নিজস্ব সিকিউরিটি, ফায়ার ফাইটার ও ডগ স্কোয়াড আছে। বাচ্চাদের জীবিত উদ্ধার করতে আমরা ডগ স্কোয়ার্ডের সহায়তা নিয়েছি। এছাড়া এই শপিং মলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ও অবৈধ কোনো কিছুর বিষয়ে আমরা ডগ স্কোয়ার্ডের সহায়তা নেই। ডগ স্কোয়ার্ড আমাদের প্রতিনিয়ত সাহায্য করে যাচ্ছে। নতুন ট্রেনার দিয়েও আমরা এই ডগ গুলোকে ট্রেন করছি। অগ্নি নির্বাপনে আমাদের সঙ্গে নতুন কিছু অপারেট যুক্ত হয়েছে। অগ্নি নির্বাপনের জন্য আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি আছে। আল্লাহ না করুক, এমন কোনো দুর্যোগ আসলে আমরা তা মোকাবিলা করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
এমএমআই/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।