ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে বলরামের সমৃদ্ধ জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে বলরামের সমৃদ্ধ জীবন

বলরাম কর্মকার (৬৫)। ছেলে ও স্ত্রীর চিকিৎসায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

ভিটেমাটি বিক্রি করে ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। পরিণত হন ভূমিহীনে। সর্বস্ব হারিয়ে হতাশ এই মানুষটি ভারত চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের একটি ঘর দেন। এই ঘরে তার শেষ বয়সে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এই ঘরের সঙ্গে পেয়েছেন দুই শতক জমি। জমির একটি কোণে কামারশালা স্থাপন করেছেন। এখানে দা, কাঁচি, বঁটি তৈরিসহ লোহার কাজ করে অর্থ উপার্জন করছেন। সেই সঙ্গে ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করছেন। আশ্রয়ণের আঙিনায় লাউ, বেগুন, ডাঁটাসহ সবজির আবাদ করেছেন। পঙ্গু ছেলে জয়দেব কর্মকারকে নিয়ে তার সংসার এখন ভালোই চলছে।

বলরাম কর্মকার গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ঊনশিয়া গ্রামের মনোরঞ্জন কর্মকারের ছেলে।


বলরাম কর্মকার বলেন, ‘আমার বাবা মনোরঞ্জন কর্মকার ঊনশিয়া গ্রামের একজন বিখ্যাত কর্মকার ছিলেন। আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো ছিল। বাবার মৃত্যুর পর আমি সংসারের হাল ধরি। আমার দোতলা টিনের ঘর ও দুই বিঘা মাঠের জমি ছিল। স্ত্রী ও ছেলে অসুস্থ হলে ঋণ করে তাদের চিকিৎসা করাই। স্ত্রী মারা যায়। ছেলে সুস্থ হয়। ঋণের দায়ে জমি, বাড়ি বিক্রি করে দিই। ভূমিহীন হয়ে আমার বাড়িতেই ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকি। পাঁচ ছেলের মধ্যে পঙ্গু ছেলে জয়দেব আমার সাথে রয়েছে। চার ছেলে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছে। ভিটেমাটি হারিয়ে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। তাই ভারত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। পরে ইউপি চেয়ারম্যান দেড় বছর আগে আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের একটি ঘর পাইয়ে দেন। এই ঘরে বসবাস করছি। ঘরের পাশে কামারশালা করে লোহার কাজ করছি। পঙ্গু ছেলেকে নিয়ে কাজ করে এখান থেকে সংসার চালানোর টাকা উপার্জিত হচ্ছে। এই আয় দিয়ে পাঁচজনের সংসার ভালোভাবে চলছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমাকে তিনি নতুন করে বাঁচার অবলম্বন করে দিয়েছেন। ’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরেদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের একটি ঘর ও ২ শতাংশ জমি দিয়েছেন। ঘর বিতরণের ক্ষেত্রে  প্রতিবন্ধী, অসহায়, স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। ’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি ও অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, ‘দেশে কোনো মানুষই ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না বলে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে আমরা কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৩৫টি ঘর বিতরণ করেছি। আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে আরো ১২৯টি ঘর হস্তান্তর করবেন। এর মধ্যে দিয়ে কোটালীপাড়া ভূমিহীনমুক্ত উপজেলা হবে। ’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।