ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বীরঙ্গনা সংবর্ধনায় সম্মানিত রাজবাড়ির নূরজাহান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
বীরঙ্গনা সংবর্ধনায় সম্মানিত রাজবাড়ির নূরজাহান বীরঙ্গনা সংবর্ধনায় সম্মানিত রাজবাড়ির নূরজাহান, ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় একাত্তরে মাত্র ১৩ বছরের কিশোরী ছিলেন নুরজাহান। তিনিও রেহাই পাননি পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকারদের নজর থেকে।

 

প্রথমে মা ও ছোট ভাইকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় ওরা। তারপর রাজাকাররা নুরজাহানকে তুলে দেয় হায়েনাদের হাতে। একটি বদ্ধ ঘরে আটকে রেখে দিনে এক বা দুইবেলা খাবার দিয়ে রাতে নরপশুরা হামলে পড়ত অতটুকু মেয়ের ওপর। এভাবে প্রায় দুই মাস অমানবিক নির্যাতন সইতে হয়েছে তাকে।

একাত্তরের এই বীরাঙ্গনা নুরজাহান বেগমের বয়স এখন ৭০-এর কাছাকাছি। রোববার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসে এই নারীকে 'বীরঙ্গনা সংবর্ধনা'য় সম্মানিত করে এবিজি লিমিটেড এবং ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাপেক্স অব বাংলাদেশ।

এ সময় তিনি অনুভূতি প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, এই সংবর্ধনা পেয়ে আমার ভালো লাগছে খুব।

নুরজাহান বেগম বলেন, আমি সবকিছুই পেয়েছি, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার ভাতা এখনো হয়নি। আমি আবেদন করেছি। উপজেলা প্রসাশন থেকে কাগজপত্রও সবকিছু দেখে ঠিকঠাক করেছে। কিন্তু এখনো ভাতা চালু হয়নি। তবে বলে এপ্রিল থেকে চালু হবে।

রোববার বিকেলে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে নুরজাহান বেগমসহ আরও দুজন নারীকে 'বীরঙ্গনা সংবর্ধনা' দেওয়া হয়। অন্য দুজন হলেন মাগুরার লাইলি বেগম এবং কুষ্টিয়ার দুলজান নেছা। এ সময় তাদের সম্মাননা স্মারক এবং ৫০ হাজার করে টাকা তুলে দেওয়া হয়।

আয়োজনে দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, এপেক্স বাংলাদেশের জাতীয় সভাপতি মো. আবদুল মতিন শিকদার, এপেক্স বাংলাদেশের এনওয়াইসিডি মো. আনোয়ার হোসেন বাবুসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

দুঃসহ দিনগুলোর স্মৃতি তুলে ধরে নুরজাহান বেগম বলেন, আমার মতো আরও ১২-১৩ জন মেয়েকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। দুজন মারাও যায়। যারা বেঁচে ছিলাম, তারা প্রতিনিয়ত ডাকতাম বিধাতাকে। বলতাম, এই হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা করো। বিধাতা হয়তো আমাদের কথা শুনেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা হায়েনাদের পরাজিত করে এবং আমাদের উদ্ধার করে।

নুরজাহানের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম মোকাররম হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এইচএমএস/এসআইএস

 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।