ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সব ভাতা পুনঃনির্ধারণ করা এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করাসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ শিরোনামে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানিয়েছে তারা।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে আগামী ১২ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হবে।
সরকারি কর্মচারীদের দাবি গুলো হচ্ছে-
১) পে-কমিশন গঠন পূর্বক পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের আগে কর্মচারীদের জন্য অন্তবর্তীকালীন ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে।
২) ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
৩) সচিবালয়ের ন্যায় সব দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
৪) টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/ আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৫) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৬) আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে।
৭) বাজারমূল্যের ঊর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় পূর্বক সব ভাতা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেস আলী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি ও পরিবারের ভরণ-পোষণ বর্তমান বেতনের টাকা দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না। ৫ বছর পর পর পে-স্কেল দেওয়ার প্রথা চালু থাকলেও ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেল দেওয়ার পর দীর্ঘ ৭ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যায়ে কর্মচারীদের নবম পে-স্কেলসহ ভাতাদির অসংগতি দূর করার দাবি জানাচ্ছি এবং তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মো. ওয়ারেস আলী আরও বলেন, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ তারিখের মধ্যে উল্লেখিত দাবিসমূহ যদি বাস্তবায়ন না হয় অথবা প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনার সুযোগ না দেওয়া হয় তাহলে আগামী ১২ মে কেন্দ্ৰীয় শহীদ মিনারে ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে। তারপরও দাবি বাস্তবায়িত না হলে পরবর্তীতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।
মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন ১১-২০ ব্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সমন্বয়ক মাহমুদুল হাসান।
এ সময় মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেস আলী। মানব্বন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল, সমন্বয়ক আনোয়ারুল ইসলাম তোতা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৩
ইএসএস/এমএমজেড