ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ঝালকাঠি সদরের বাউকাঠি গ্রামে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে সুপেয় পানি সরবরাহের পিএসএফ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। তবে মাঝ পথে প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ায় এই প্রকল্পের যথাযথ সুবিধা ভোগ করতে পারেনি সুবিধাভোগীরা।
জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের জন্য জেলা সদরের বাউকাঠি গ্রামের কয়েকশ পরিবারের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণে তিন বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পন্ডস অ্যান্ডস ফিল্টার প্রকল্প। ঘরে ঘরে টিনের চালে পড়া বৃষ্টির পানি ধরে রেখে লম্বা পাইপের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী পুকুরে তা সংরক্ষণের পর ফিল্টার করে উপকারভোগীদের খাবার পানি হিসেবে সরবরাহ করাই ছিলো প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রকল্প শুরুর পর থেকেই নানা অব্যবস্থাপনা আর দেখভালের অভাবে প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। ফলে গ্রামের শতশত পরিবারের নিরাপদ পানি সরবরাহের উদ্দেশ্য বিফলে যায়। তাই এখন তাদের গোসল-খাওয়াসহ সবকাজে আশপাশের নোংড়া পানিতেই ভরসা করতে হচ্ছে। এ প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি তৈরি করা ড্রাম ও পাইপগুলো এখন ভেঙে পড়ে আছে। চুরি হয়ে যাচ্ছে পুকুরে বসানো বিভিন্ন
অবকাঠামোর মালামাল। সোলার প্যানেল ও ফিল্টার মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে সরকারি অর্থ অপচয় ছাড়া এই প্রকল্পের কোনো সুবিধা ভোগ করতে পারেনি এলাকার মানুষ।
ইউপি সদস্য (সাবেক) এমাদুল হক ফলপরি বলেন, এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়মের কারণে আমরা এর সুবিধাভোগ করতে পারিনি। এখন এই প্রকল্পের মালামাল একটি প্রভাবশালীচক্র লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাতে এই প্রকল্পের অর্থ ষোলআনাই অপচয় হয়েছে। শুরু থেকে অনিয়ম রোধ করা গেলে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারতেন।
গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকারি এ পুকুরে আমাদের বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য পিএসএফ প্রকল্প অনুমোদন হয়।
বিভিন্ন কারণে এগুলোর যন্ত্রাংশ বন্ধ থাকায় এখন এলাকার একটি মহল পুকুরটি অবৈধভাবে লিজ নেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে আমরা শুনতে পাচ্ছি। একই সঙ্গে তারা প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত মালামাল আত্মসাৎ করতে চায়। আমরা মনে করি কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মো. সোহাগ হাওলাদার নামে আরেক গ্রামবাসী বলেন, সুপেয় পানির সঙ্গে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট পুকুরগুলোতে চারপাশে হাঁটার রাস্তা, শাক-সবজি চাষসহ সৌন্দর্য্য বর্ধনেও নেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন উদ্যোগ কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় ভেস্তে যেতে বসেছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, বর্তমানে প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে তাই কিছু কাজে ঢিলেমি এসেছে। তবে যেটুকু নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোকে সচল করে সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
আরএ