ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় সীমান্ত সুরক্ষিত রয়েছে: নিত্যানন্দ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় সীমান্ত সুরক্ষিত রয়েছে: নিত্যানন্দ 

সিলেট: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন সে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকায় সীমান্ত অনেক সুরক্ষিত রয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক রয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (০৪ মে) দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে এসে পৌঁছালে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রনয় কুমার ভর্মা ও চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নেতারা অতিথিদের স্বাগত জানান।

এসময় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের মেঘালয়ের ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধনে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিকভাবে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হবেন। ডাউকি স্থলবন্দর নির্মাণ হওয়ায় বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে উভয় দেশ আরও এগিয়ে যাবে। মেঘালয়ে আগত পর্যটকরা আধুনিক মানের সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন।

ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, মেঘালয়ের ডাউকি অনেক সুন্দর পর্যটন এলাকা। শিলং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশেন পর্যটকদের জন্য চমৎকার জায়গা। ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ-ভারত সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ফেনী নদী খনন করার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া ডাউকি স্থলবন্দরে তথ্য-প্রযুক্তি ও আধুনিক মানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ডাউকি স্থলবন্দর ভারতীয় সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত হবে।

নিত্যানন্দ রায় আরও বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মেঘালয় রাজ্যের উন্নয়নে যুগান্তকারী উন্নয়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামসহ সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে উভয় দেশ কাজ করে যাচ্ছে।  

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সরকারের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অদিত্য মিশরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় কুমার ভর্মা, মেঘালয় রাজ্য সরকারে ডেপুটি চিফ মিনিস্টার সাং ওয়াবাং ডিয়ার, মেঘালয় সরকারের এডিশনাল সেক্রেটারি ডা. সাকিল আহম্মদ, সিলেট নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জেসওয়াল, বিএসএফ শিলং সেক্টরের ডিজি প্রদীপ কুমার, মেঘালয় পুলিশের ডিজিপি ডা. এল ভূষন আইপিএস এবং পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলর্সর এলাকার এমএলএ লকমন রাম্বাই।

অনুষ্ঠানে ডাউকি স্থলবন্দর নিমার্ণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের মধ্যে উত্তরীয় দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মেঘালয় চেম্বার অব কমার্সের সেক্রেটারী ডলি খংলো সহ স্থানীয় আদিবাসী নেতাদের অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।  

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংলগ্ন ২৩ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত নতুন নির্মিত ডাউকি স্থলবন্দর, নতুন স্থলবন্দর ডাউকি জাতীয় মহাসড়ক ২০৬ এবং এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত। এটি ভারত ও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে রাজ্যের প্রথম স্থলবন্দর, রাজধানী শহর শিলং থেকে ৮৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।  

ডাউকি শিলংয়ের সঙ্গে একটি সর্ব-আবহাওয়া সড়ক দিয়ে সংযুক্ত এবং বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য একটি সুবিধাজনক পয়েন্টে থাকবে। যারা 'প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড' খ্যাত শিলংয়ে আগ্রহের স্থানগুলি দেখার জন্য ভারতে যান। তাদের জন্য এই স্থলবন্দরে অনেক সুবিধা রয়েছে।

ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধীনে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং নির্বিঘ্নে দক্ষ করার সুবিধার্থে অত্যাধুনিক অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

ডাউকি স্থলবন্দর বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানোর সামগ্রিক উদ্দেশ্য নিয়ে পণ্যসম্ভার এবং যাত্রীদের চলাচল, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের প্রচার সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধার অনুশীলনগুলো করা হবে।

 এখানে এলপিএআই তার আইসিপি গুলিতে পণ্যবাহী পরিবহনের পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপদ,সুরক্ষিত এবং পদ্ধতিগত সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে। আইসিপিতে বেশির ভাগ পরিসেবাই বিনামূল্যে, বাণিজ্যের জন্য যে গুলি শুল্কের নির্ধারিত হার অনুযায়ী চার্জ করা হয় ।

বাণিজ্যের জন্য চার্জযোগ্য পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে পার্কিং,ওজন পরিসেবা, লোডিং/আনলোডিং এবং গুদামজাতকরণের জন্য চার্জ। যাত্রীদের জন্য কোন প্রবেশ মূল্য নেই। আইসিপি'তে সমস্ত যাত্রী সুবিধায় বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হবে।

স্থলসীমান্তে এলপিএআই প্রদত্ত সবরকম সুযোগ-সুবিধার পরিসরের ডাউকি স্থলবন্দর নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতীয় সরকার সীমান্তে স্থলবন্দর তৈরি করে পণ্যসম্ভার ও যাত্রী চলাচলের জন্য নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন এবং দক্ষ ব্যবস্থা প্রদান করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। এতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ডাউকি স্থলবন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪ ৫৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৩
এনইউ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।