ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রাতের রিকশাচালকরাই টার্গেট তাদের, গ্রেপ্তার ৬

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
রাতের রিকশাচালকরাই টার্গেট তাদের, গ্রেপ্তার ৬

ঢাকা: ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, রাজধানীর ওয়ারীতে গত ২৯ এপ্রিল দিনগত মধ্য রাতে রিকশাচালক সিজার হোসেনকে (২১) রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে রিকশা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ।

 

সোমবার (৮ মে) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন হারুন অর রশীদ।

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা, বরিশাল জেলার কাজিরহাট থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা, ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ও মূল পরিকল্পনাকারী মো. বায়োজিদব (২২), মো. রাসেল (২৪), হৃদয় হাওলাদার ওরফে সাইদুর (২৩), হুমায়ুন কবির (৩৫), মো. হৃদয় (১৭) ও মো. সেলিম (৩০) নামে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, গত ৩০ এপ্রিল কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর শিল্প এলাকার কদমতলী স্টিল মিলস (প্রা.) লি. এর সামনে পাকা রাস্তার ওপর একটি অজ্ঞাতনামা মরদেহ পায় পুলিশ। পরে শনাক্ত হলে মৃতের বাবা মো. রবিউল ইসলাম কদমতলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানার মামলা নং-৪৪। মামলাটি গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগেরর ডেমরা জোনাল টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুলের নেতৃত্বে একটি দল কাজ করে।  

ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান বলেন, আসামিরা গত ২৯ এপ্রিল রাতে পরিকল্পনা করে ওই রাতে যে রিকশাটিই পাবে সেটিই ছিনিয়ে নেবে। এজন্য ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য হৃদয়কে নাজিরা বাজার পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হৃদয় সিজারের চালিত অটোরিকশাটি ভাড়ায় ডেকে নিয়ে আসে। রাত সাড়ে ১২টা দিকে কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর শিল্প এলাকায় বসে অপেক্ষায় থাকে বায়জিদ, রাসেলরা। রিকশাচালক সিজার হোসেন সেখানে পৌঁছানো মাত্র রিকশাটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা পেয়ে সিজারকে লোহার রড দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে হত্যা করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাটি নিয়ে তারা চলে যায় কদমতলী চিটাগং রোডে। সেখানে তারা চক্রের সদস্য সেলিমের কাছে মাত্র ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এর আগেও চক্রটি একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। অধিকাংশ সময় হাত-পা বেঁধে ফেলে রিকশা ছিনতাই করতো তারা। ওই রাতে বাধা পাওয়ায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়। চক্রের আরও এক সদস্য পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, অধিকাংশ ক্লুলেসের ঘটনায় সাক্ষি প্রমাণ থাকে না। তখন আসামি ধরা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এই ঘটনায় আরও একজন পলাতক আছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটে সাধারণত রাতে। সেজন্য সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ অধিকাংশ থেকে এই ধরনের ঘটনায় থানায় জিডি কিংবা মামলা করা হয় না। আমার অনুরোধ এমন ঘটনা ঘটলে থানায় অভিযোগ করুন, তাতে ডিবি পুলিশ তথ্যটি পাবে ও অভিযান অব্যাহত রাখবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চক্রের সদস্যদের চিন্তা-কাজই হচ্ছে রাতে ছিনতাই করা, টার্গেট অটোরিকশা। ছিনতাইকারীরা মনে করে এতে করে পুলিশ জানবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।