ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, ১৫ হাজার টাকায় মীমাংসার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, ১৫ হাজার টাকায় মীমাংসার অভিযোগ অভিযুক্ত লিটন শেখ

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনা ১৫ হাজার টাকায় মীমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী।

অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই রাজবাড়ী সদরে নানাবাড়িতে থাকে শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই কিশোরী। সে কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তাদের প্রতিবেশী ছলেমান শেখের ছেলে লিটন শেখ (৩০) নিজ বাড়ির ওপরে মুদি দোকান করে। গত ২ মে বিকেলে লিটনের দোকানে পণ্য আনতে যায় ওই কিশোরী। একা পেয়ে লিটন তাকে হাত ধরে টেনে দোকানের পেছনে নিজের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলে, আমি লিটনের দোকানে আরসি আনতে গেলে সে আমার হাত ধরে টেনে তার ঘরের ভেতর নিয়ে দরজা আটকিয়ে মুখ চেপে ধরে নির্যাতন করে, খারাপ কাজ করে। পরে আমি বাড়ি এসে ঘটনাটি আমার নানিকে জানাইছি।

এর আগেও লিটন শেখ আরসি ও চিপস খাওয়ানোর কথা বলে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।

কিশোরীর নানি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার নাতনিকে আমি আমার কাছে রেখে দেখভাল করছি। ওর মা বিদেশে থাকে। লিটন ওর সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। ও এসে আমার কাছে ঘটনাটি বলার পর আমি আমাদের এলাকার মাতুব্বর রহমান খাঁ ও হক মোল্লাকে জানাই। রহমান খাঁ বিষয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু হক মোল্লা বিষয়টি নিজে মীমাংসা করে দেবেন বলে জানান।

পরে হক মোল্লা লিটনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আমাদের দিয়েছেন। লিটন এসে আমাদের কাছে মাফ চেয়ে গেছে। সে আর জীবনে কোন দিন এমন কাজ করবে না বলে ওয়াদা করেছে। আমার নাতনির বয়স কম, তাকে বিয়েশাদি দিতে হবে। তাই মানসম্মানের কথা চিন্তা করে আমরাও বিষয়টি মেনে নিয়েছি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জাহিদ শেখ বলেন, লিটন এর আগেও এক মেয়ের সঙ্গে অপকর্ম করে ধরা পড়েছে। সে এ পর্যন্ত ৩-৪টি বিয়ে করেছে, সব স্ত্রীই তাকে ছেড়ে চলে গেছে। এবার সে প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। কিছু লোক ১৫ হাজার টাকা বিনিময়ে এ ঘটনা মীমাংসা করে ধামাচাপা দিয়েছে। ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা যদি টাকার বিনিময়ে মীমাংসা হয়, তাহলে তো দেশে আইন থাকবে না। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।  

এ ঘটনার মীমাংসা করা ব্যক্তি হক মোল্লা বলেন, মেয়েটি গরিব ঘরের। ছেলেটিও গরিব মানুষ। মেয়েটিকে তো এ সময় বিয়েশাদি দিতে হবে। তাই আমরা দুইপক্ষকে গোপনে ডেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি মীমাংসা করে দিয়েছি।

অভিযুক্ত লিটন শেখ বলেন, এলাকার কিছু লোকের সঙ্গে আমার শত্রুতা আছে। তারা ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। মানসম্মানের ভয়ে আমি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করেছি।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার (এসপি) এমএম শাকিলুজ্জামান বলেন, এ ধরনের ঘটনা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।