ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি

ঢাকা: বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করছেন পোশাকশ্রমিকরা। কিন্তু বছরের পর বছর স্বল্প মজুরিতে কাজ করে শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

অর্থের অভাবে তাদের সন্তানরা স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। একই সাথে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে পুষ্টিকর খাদ্য থেকেও শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। মৌলিক চাহিদার খরচ বহন করতে তারা ধার করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের এমন একটি ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজন, যা মূল্যস্ফীতি এবং অন্যান্য সংকট বিবেচনায় রেখে মৌলিক চাহিদার পাশাপাশি শ্রমিকের পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে পারে।

সোমবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে পোশাকখাতে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)। সহযোগিতায় ছিল এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশ।

বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, নারীরা যখন মা হয় তখন তাদের সঠিক খাবার দেওয়া হয় না, তাই তাদের পুষ্টির অভাব হয়। একইভাবে নারীদের মজুরিও কম দেওয়া হয়। কিন্তু নারীরা পুরুষের সঙ্গে বাইরে কাজ করে আবার ঘরেও কাজ করে। তাই তাদের সমান অধিকার দরকার। কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র এদিকে ফেইল করেছে।  

তিনি আরও বলেন,  দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কৃষক এবং শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। গার্মেন্টসে শ্রমিকরা যে শ্রম দেয়, তাদের সে শ্রমের ন্যায্য অংশ দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, বেঁচে থাকার মতো মজুরি না দিলে গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার মজুরি কিন্তু আপেক্ষিক। আমেরিকায় একরকম আর আমাদের আরেক রকম। আমার মতে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ২০-২১ হাজার টাকা হতে হবে।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি ও মজুরি বোর্ডের শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, আমাদের মজুরি ৩৭০ থেকে ৮ হাজার টাকায় এসেছে, এটা কিন্তু এত সহজে আসেনি। এর জন্য আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এখন আমাদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল ভয়েস তোলা উচিত। কারণ সারা পৃথিবীতে আমরা কেন কম মজুরিতে কাজ করব?  ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া তো কম মজুরিতে কাজ করে না। তাহলে আমরা কেন করব?

এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের সভাপতি কাজী রহিমা আক্তার সাথী বলেন, পাঁচ বছর হয়ে গেলেও আমাদের মজুরি বাড়ানো হচ্ছে না।  এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সবকিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়াচ্ছে না।

বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর নাবিলা ফারহিনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
ইএসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।