ঢাকা, শনিবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভালোবাসার টানে ফরিদপুরে জাপানি ব্যবসায়ী, নিতে চান লোকবল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
ভালোবাসার টানে ফরিদপুরে জাপানি ব্যবসায়ী, নিতে চান লোকবল

ফরিদপুর: প্রায় ৬ মাস আগে প্রথমবারের মতো ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরে ছুটে আসেন জাপানি ব্যবসায়ী তামিকো মিজোয়ই। সেই সময় গ্রামের মানুষের ভালোবাসা আর মানবকল্যাণে অকো-টেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের অবদান দেখে মুগ্ধ হন তিনি এবং বলেন, আবার ফিরে আসবো এই বাংলায়।

 

সেই কথা রাখলেন এবং সেই ভালোবাসার টানে মিসেস তামিকো এবার কানাইপুর ইউনিয়নের পুরদিয়া গ্রামে সিআইপি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের জন্মস্থানে এসেছেন স্ব-পরিবারে।

মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে কানাইপুর ইউনিয়নের পুরদিয়া আনসার আলী মিয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে ত্রৈমাসিক বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন জাপানের সাপোর্ট সিষ্টেম কো-অপারেটিভ লিমিটেডের কর্ণধার মিসেস তামিকো মিজোয়ই।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- তার ছেলে জাপানি ব্যবসায়ী মি. কেনজি মিজোয়ই এবং দৌহিত্র আয়ূম্মু মিজোয়ই।

অকো-টেক্স গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সাজিদ-সোবহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের এই আয়োজনের মাধ্যমে ৪২০ জন ভাতাভোগীকে নগদ ৫০০ টাকা, ২৫ কেজি চাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ২ কেজি ডাল দেওয়া হয়।  

জেলার ছয়টি ইউনিয়ন- সদরের কানাইপুর, কৈজুরী, কৃষ্ণনগর, চাঁদপুর এবং সালথা উপজেলার গট্টি ও আটঘর ইউনিয়নের এসব মানুষের মধ্যে প্রতি তিনমাস পরপর এ ভাতা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অকো-টেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাজিদ-সোবহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাতা বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জাপানের সাপোর্ট সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের কর্ণধার মিসেস তামিকো মিজোয়ই।

বক্তব্যকালে জাপানের এই ব্যবসায়ী বলেন, আপনাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আবার ফিরে এসেছি। আপনাদের দেখে আমি খুবই আনন্দিত। আমার দ্বিতীয়বার আসার কারণ, আমি বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যে কিছু করতে চাচ্ছি। আপনাদের এমডি স্যারের সহযোগিতায় জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে চাই।  

এ সময় তিনি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের মাধ্যমে জাপানে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

এ সময় মি. কেনজি মিজোয়ই বলেন, আপনাদের এমডি স্যারের সহযোগিতায় জাপানে নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছি এবং সেখানে অনেক লোকবল লাগবে। ইঞ্জিনিয়ার সোবহান সাহেবের মাধ্যমে এদেশ থেকে সেখানে অনেক লোক নেওয়া হবে।

এ সময় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান সবার দোয়া কামনা করে বলেন, আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরাও চাই, আপনারা দ্রুত অস্বচ্ছল থেকে দ্রুত স্বচ্ছল হয়ে উঠবেন। এটা আপনাদের পাওনা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, স্বচ্ছল ব্যক্তিদের অর্থাৎ ধনীদের সম্পদে মহান আল্লাহ তায়ালা অস্বচ্ছলদের একটি অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও আলেয়া ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডের কর্ণধার মি. মোহাম্মদ মোস্তফা, কানাইপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসান, কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যন ও সাজিদ-সোবহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ফকির মো. বেলায়েত হোসেন।

এ সময় অষ্টমবারের মতো সিআইপি পদক পাওয়ায় অকো-টেক্স গ্রুপের এমডি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানকে অভিনন্দন জানান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন।

আলোচনা পর্ব শেষে ভাতাভোগীদের মাঝে চাল, ডাল ও তেল তুলে দেন অতিথিরা। এ সময় ভাতাভোগীদের সঙ্গে মিশে যান মিস তামিকো মিজোয়ই। তিনি বয়স্ক নারীদের বুকে টেনে নেন।

এরপর অতিথিরা পুরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় অতিথিদের বাংলাদেশ ও জাপানের পতাকা উড়িয়ে ও লাল গালিচায় বরণ করে নেন শিক্ষার্থীরা। পরে আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের মতো ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠার আহ্বান জানান জাপানি অতিথিরা।  

এসময় তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠলে তোমাদের জন্য জাপানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।