ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরার আহ্বান

ঢাকা: পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম।

রোববার (২৮ মে) দুপুরে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ভবনে (পিকেএসএফ) সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।

‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি অন্তরায় তামাক। তামাক ব্যবহারের জন্য দেশে তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ এবং এর ফলে অপরিণত বয়সে মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক সেবনজনিত রোগের চিকিৎসা বাবদ একদিকে যেমন সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে তামাক চাষের ফলে উর্বর জমিতে খাদ্যশস্য চাষের সুযোগ কমে যাচ্ছে।

সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মানস (মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা) অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।   

অতিথির বক্তব্যে ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিকগুলো সম্পর্কে আরও বিশদভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং এ তামাকের ক্ষতিকর দিক মোকাবিলায় পারিবারিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে শেষ করার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তামাক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করার দাবি তোলেন।  

কৃষি মন্ত্রণালয়কে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, পিকেএসএফ বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্পের আওতায় তামাক বিরোধী কার্যক্রম, বিশেষ করে তামাকের জমিতে বিকল্প ফসল উৎপাদনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ধোঁয়াযুক্ত তামাকের ব্যবহারে যিনি সরাসরি খাচ্ছেন, তার চেয়ে তার আশপাশের পরোক্ষভাবে ধোঁয়া গ্রহণকারী মানুষেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। মহিলাদের স্তন ক্যান্সার, শিশুদের নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস ও হুপিং কাশির অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পরোক্ষ ধূমপান। সিগারেটের ধোঁয়ায় সাত হাজার ৩৬৫ রকমের রাসায়নিক থাকে, যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক কারসিনোজেনিক (মানবদেহে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে এমন)।

পিকেএসএফ-এর সিনিয়র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম তৌহিদ তার বক্তব্যে বলেন, পিকেএসএফ-এর সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার জেলাসমূহে তামাকের পরিবর্তে বিকল্প ফসল চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া, পিকেএসএফ-এর PACE প্রকল্পের আওতায় হালদা নদীর উজানে বিদ্যমান তামাক চাষিদেরকে বিকল্প জীবিকায়নে যুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আয় বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তকরণের কাজ করা হচ্ছে।

সেমিনারে ‘টেকসই উন্নয়নে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞা-এর হেড অব প্রোগ্রাম মো. হাসান শাহরিয়ার। ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলাও: পিকেএসএফ-এর প্রচেষ্টা’ শীর্ষক উপস্থাপনা প্রদান করেন প্রকল্প পরিচালক, পিপিইপিপি, পিকেএসএফ ড. শরীফ আহম্মদ চৌধুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘কৃষি জমিতে আর নয় তামাক’ শীর্ষক একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
আরকেআর/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।