ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড় পেলেন বাবা-ছেলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড় পেলেন বাবা-ছেলে

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের সমর্থক মোতালেব সরকারের পা ধরে ক্ষমা চাইলের এক যুবক। এরপর ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাবাসহ ছাড় পেলেন তিনি।

এতেই শেষ নয়; পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত মোতালেব সরকার ও তার সঙ্গীরা।

ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম আব্দুল মমিন (৩৫)। তিনি উপজেলার চরচালা গ্রামের দৌলত মণ্ডলের ছেলে।  

এ ঘটনায় শুক্রবার (২ জুন) রাতে বেলকুচি থানায় এজাহার দায়ের করেন ভুক্তভোগী যুবকের ভাই নাবিন মণ্ডল। তবে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।  

নাবিন মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, গত ১৩ মে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দু’গ্রুপের হাতাহাতি সময় ঘটনাস্থলের পাশে ছিলেন আমার ভাই আব্দুল মমিন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও ঘটনার পর থেকে মোতালেব সরকার, আবু তালেব সরকার, রানা, রিজন, রিফাতসহ এমপির ক্যাডার বাহিনী বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল।

এ অবস্থায় গত ২৯ মে রাত ৯টায় মোতালেবের সহযোগী রানা, রিজন, রিফাত এবং হোসেন আলী তাদের বাড়ি গিয়ে মমিনকে খোঁজ করেন। এক পর্যায়ে কৌশলে আমার বাবা দৌলত মণ্ডল ও বড় ভাই মমিনকে ডেকে রাস্তার পাশে আমাদের পত্রিকা দোকানে নিয়ে যায়। দোকানের সামনে আসার পর হোসেন আলী হাসান আমার বাবার কোমরে অস্ত্র ঠেকিয়ে দুজনকে মোটরসাইকেল উঠিয়ে সুবর্ণসাড়া তেলপাম্পের নিচে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের দুজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পরিত্যক্ত একটি নির্জন ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক পেটায়। মমিনের কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে মোতালেব বলেন, তোদের বাপ-বেটাকে গুলি করে মারলে ঠেকাবে কোন বাবা? এক পর্যায়ে মোতালেব সরকার দৌলত মণ্ডলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এক লাখ টাকামুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় মোতালেব আমার ভাই মমিনকে তার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন এবং নিজ মোবাইল ফোনে ক্ষমা চাওয়া ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে। প্রাণ বাঁচাতে আমার বাবা আমাদের সঙ্গে মুক্তিপণের টাকার জন্য যোগাযোগ করেন। আমরা এক লাখ টাকা জোগাড় করে আমার চাচা জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে মোতালেবের হাতে দিয়ে বাবা ও ভাইকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

বেলকুচির পত্রিকার এজেন্ট দৌলত মণ্ডল বলেন, মোতালেব সরকার এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের ক্যাডার। তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার বিরুদ্ধে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিপনকে হাতুড়ি পেটা করাসহ একাধিক মামলাও রয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মোতালেব সরকার বলেন, ১৩ মে মেয়র রেজা গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় দৌলত মণ্ডলের ছেলে মমিন আমাকে পেছন থেকে ধরে রেখেছিল। যদিও ওই ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। এ বিষয়ে ২৯ মে তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে সে আমার কাছে পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, নাবিন মন্ডলের একটি এজাহার পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্তের পর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।