ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাবার ফাঁসির দাবিতে সন্তানদের মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
বাবার ফাঁসির দাবিতে সন্তানদের মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে মাকে হত্যার অভিযোগ তুলে বাবার ফাঁসি চেয়েছেন সন্তানেরা।  

সন্তানদের অভিযোগ, বাবা জসিম উদ্দিনের পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার জের ধরে তাদের মা সেলিনা আক্তারকে খুন হতে হয়েছে।

বাবা জসিম উদ্দিনই তাদের মাকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করেছেন।  

সোমবার (৫ জুন) সকালে সদর উপজেলার জকসিন বাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে এমন দাবি করেন সন্তানেরা।  

মানববন্ধনে মৃত সেলিনা এবং জসিম দম্পতির চার সন্তান রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আবদুল আজিজ সৌরভ উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা তাদের বাবার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।  

তারা জানান, সেলিনা আক্তারের নামে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়িতেই স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন সেলিনা। এদিকে জসিম একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। প্রায় ছয় মাস আগে ওই মেয়েকে বিয়ে করেন জসিম। এ নিয়ে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হতো। এছাড়া তাদের মায়ের নামে থাকা পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার জমি এবং ভবন তাদের বাবার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেন জসিম। এতে রাজি না হওয়ার তাদের মাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন তিনি।  

সন্তানেরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ মে বিকেলে তাদের বাবা তাদের মাকে কল দিয়ে পৌরসভার বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাচারিবাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে জসিম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাহীন আক্তার সাথী তাদের মাকে মারধর করেন। এতে তাদের দাদা এবং দাদিও সহযোগিতা করেন। একপর্যায়ে তাদের মায়ের মুখে বিষ ঢেলে দেন তাদের বাবা। পরে একটি অটোরিকশায় করে তাদের মাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। পরে তাদের বাবা মৃতদেহ রেখে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।  

এ ঘটনায় আমরা বিচার দাবি করায় বাবা আমাদেরও হুমকি দিয়েছেন। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের মায়ের বাসা থেকে বের করে দিতে চান বাবা। তাই আমরা বাবাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, দাবি করেন সন্তানরা।  

এদিকে ঘটনার পরদিন জেলা সদর হাসপাতালে সেলিনার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় মৃত সেলিনার ভাই মোক্তার হোসেন বোনকে হত্যার অভিযোগ এনে ৩১ মে সদর থানায় একটি এজাহার দেন। এতে জসিম উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে তার দ্বিতীয় (২২), বাবা নুরুল ইসলাম (৭০) ও মা লালমতি বেগমসহ (৬০) পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়। তবে এজাহারটি সদর থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে তিনি এ বিষয়ে ৪ জুন আদালতে একটি মামলা করেন।  

মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানান, জসিম উদ্দিন খারাপ প্রকৃতির লোক। একাধিক নারীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তিনি তার স্ত্রী সেলিনাকে হত্যা করেছেন। আমরা তার ফাঁসি চাই।

সেলিনার ভাই মোক্তার হোসেন ও নুর হোসেন বলেন, ৩০ বছর আগে জসিমের সঙ্গে আমার বোনের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে চার সন্তান রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জসিম সৌদি আরবে যায়। সেখানে অনেক টাকার মালিক হয়ে সে পাষণ্ড হয়ে গেছে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সেলিনার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ কারণে হত্যা মামলা নেওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তখন পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।