ঢাকা, রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পশু পালন করে সবার অনুপ্রেরণা প্রবাসী মিলন সরকার

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
পশু পালন করে সবার অনুপ্রেরণা প্রবাসী মিলন সরকার ছবি: বাংলানিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামের ইতালি প্রবাসী মিলন সরকার। দীর্ঘ দশ বছর ধরে প্রবাস জীবন কাটালেও গত দুই বছর কোরবানিকে ঘিরে পশু লালন পালন করে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি।

গত বছর ঈদুল আযহার ছুটিতে দেশে এসে শখের বশে কোরবানির ঈদে বিক্রি করার জন্য ১৫টি পশু লালন পালন করেন। হাটে গিয়ে দামও পান বেশ ভালো। ১৫টি গরুতে তার লাভ হয় দুই লাখ টাকা। এর ধারাবাহিকতায় তিনি আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তার ভাইদের সহযোগিতায় বিভিন্ন জাতের ৩০টি গরু হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। যার অধিকাংশ ৮/১০মণ ওজনের। যার একেকটির দাম পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা।

সরেজমিনে তার খামারে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে একটি খামার। খামারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো আছে বিভিন্ন জাতের গরু। সেখানে কালো বাদামি, সাদা, লালসহ বাহারি রংয়ের মাংসল পশু দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। কেউ কেউ ব্যস্ত গরুগুলোকে গোসল করাতে, আবার কেউবা তাদেরকে খাওয়াতে ব্যস্ত। তাদের খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে খৈল, খড়, ভুষি ও সাইলেসসহ নানা জাতের প্রাকৃতিক খাবার। মূলত, কোরবানির হাটে ভালো দামের আশায় বেশ যত্নের সঙ্গে গরুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে।

কথা হয় সফল উদ্যোক্তা মিলন সরকারে সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ইতালি প্রবাসী। গত ১০/১২ বছর ধরে ইতালিতে আছি। প্রথমে আমার এক প্রবাসী বন্ধুকে দেখে গরু খামারে দিকে আকৃষ্ট হই। পরে গত বছর শখের বসে ১৫টি গরু দিয়ে একটি খামার শুরু করি। প্রথমবারে দেখি যে, আমার ভালো একটা মুনাফা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয়বার দেশে এসে ৩০টি গরু কিনে খামারটিকে আরও বড় করি। প্রাকৃতিক উপায়ে সবগুলো গরুকে মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রতিটি গরুর ওজন ৮-১০ মণ হবে। এরমধ্যে চারটি গরু বাড়ি থেকেই বিক্রয় হয়ে গেছে। অবশিষ্ট গরুগুলো হাটে তুলব। আসা করি ভালো দাম পাব। আমি যুবকদের বলতে চাই, বেকার সময় নষ্ট না করে খামার দিয়ে গরু পালন করলে বাড়িতে বসেই বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আমার খামারের গরু দেশের যেকোনো জেলা থেকে যে কেউ কিনতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আমার মোবাইল নম্বরে (০১৬১৪০৬৬৪৭১) যোগাযোগ করে অনলাইনে গরু দেখে নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে আমরা দেখি এ খামারে প্রতিটি গরুকে দেশিয় খাবার ও ঘাস খাইয়ে বড় করা হয়েছে। সে একজন প্রবাসী হয়েও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সবার অনুকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার খামার থেকে যারা গরুগুলো কিনবেন তারা ভালো মানের গরু পাবেন। তাকে দেখে গ্রামের অনেক যুবকরাই গরু পালনের দিকে আকৃষ্ট হয়েছে।

আরেক বাসিন্দা সুমন সরকার বলেন, প্রবাসী মিলনের কাছ থেকে যুবকদের অনেক কিছু শেখার আছে। প্রবাসে না গিয়েও দেশে থেকে পরিশ্রমের মাধ্যমে খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, সে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন প্রবাসী মিলন। আমরা আসা করি, এসব ছোট ছোট খামার থেকে পরবর্তীতে বড় বড় খামার দেওয়া যাবে।

স্থানীয় পশু চিকিৎসক মাসুদ রানা বলেন, এবার গরমের তাপমাত্রা ছিল বেশি। তাই পশু পালনে অনেকটা ঝুঁকি ছিল। আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি, যাতে গরুগুলোর কোনো সমস্যা না হয়। সেই আলোকেই পরিচর্যা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।