ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা সেতু দিয়ে গরু সরবরাহে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসায়ীরা

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
পদ্মা সেতু দিয়ে গরু সরবরাহে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসায়ীরা ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানী ঢাকার অভিমুখে ছুটছেন ব্যবসায়ীরা। পদ্মা সেতু চালুর পর কোরবানির পশু নিয়ে রাজধানীর হাটে যেতে পড়তে হচ্ছে না কোনো বিড়ম্বনায়।

 

শনিবার (২৪ জুন) সরেজমিনে পদ্মা সেতু এবং এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলো সেতু পার হয়ে ঢাকার দিকে ছুটছে। পশু নিয়ে হাটে যেতে আগের মতো কোনো দুশ্চিন্তা বা উৎকণ্ঠা দেখা যায় নি ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কারণ, দিনরাতের যেকোনো সময়েই পদ্মা পাড় হচ্ছেন তারা।

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকেই কোরবানির পশুবাহী ট্রাক পদ্মা সেতু পার হচ্ছে, যার সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছেই। সংখ্যায় বেশি হলেও টোল প্লাজায় কোনো যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধা মতো রাতদিনের যেকোনো সময়েই পার হচ্ছেন পদ্মা সেতু।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পদ্মায় সেতু চালু হবার পর কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকায় যেতে কোনো ভোগান্তি নেই। নির্বিঘ্নে ও ঝামেলামুক্ত ভাবে তারা রাজধানীতে যেতে পারছেন। সেতু চালুর আগে নদী পার হওয়াটাই ছিল একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিতে উঠার অপেক্ষায় ঘাটে বসে থাকতে হত। কখনওবা পার হতে না পেরে ফিরে যেতে হত। দীর্ঘ সময় ঘাটে আটকে থেকে গরমে গরু মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেক।

ব্যবসায়ীরা আরও জানিয়েছেন, সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা যেতে ভোগান্তি না থাকায় কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাটে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গ্রাম থেকে প্রচুর পশু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, গত বছর কোরবানির ঈদে মাদারীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় অনুমোদিত হাটের সংখ্যা ছিল ৩২টি। এবার এই হাটের সংখ্যা বেড়েছে। পশুর হাটকে ঘিরে ২৪টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। জেলার ১০ হাজার খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৪০ হাজার গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ করা হলে এবার ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা খামারিদের। স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি ঢাকাতেও গরু নিয়ে যাচ্ছেন খামারিরা।

স্থানীয় খামারি সজিব হোসেন বলেন, খামার থেকে এরই মধ্যে পাঁচটি গরু বিক্রি হয়েছে। বাকি গরুগুলো ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে। দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করলে চাহিদা বেশি থাকে। গতবার কিছুটা লোকসান হয়েছিল, আশা করি এবার সেটা উঠে আসবে।

মো. ফারুক নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকায় গরু পাঠানো হয়েছে। চাহিদা হলে আরও পাঠাব। এখন ঢাকা যেতে কোনো বাধা নেই। রাতেও গরু নিয়ে রওনা দেওয়া যাবে।

যশোর থেকে গরু নিয়ে আসা মো. রেজাউল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, পদ্মাসেতু থাকায় এবার ঢাকা যেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। অনেক ব্যবসায়ীরাই ঢাকামুখী হচ্ছেন গত বছর থেকেই। সেতু হওয়ায় আমাদের দুর্ভোগ কেটে গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রত্যেক খামারিকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দেশীয় পদ্ধতির বাইরে এবার জেলায় কেউ গবাদিপশু মোটাতাজা করছেন না। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে দেখভাল করছেন। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন হাটেও গরু নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।