ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাওনা না পাওয়ায় সারের টেন্ডারে অংশ নেয়নি কোনো প্রতিষ্ঠান

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
পাওনা না পাওয়ায় সারের টেন্ডারে অংশ নেয়নি কোনো প্রতিষ্ঠান

ঢাকা: সরকারের কাছে বেসরকারিভাবে নন ইউরিয়া সার আমদানিকারকদের পাওনা প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। এ অর্থ আদায় করতে না পারা ও পাওনা আদায়ের সময়সীমা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের সার আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের টেন্ডারে অংশ নেয়নি কোনো প্রতিষ্ঠান।

দেশে এ ধরণের ঘটনা এবারই প্রথম। ফলে সমস্যার দ্রুত নিরসন না হলে দেশে সারের সরবরাহ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় প্রতি বছরের মতো ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ভর্তুকির আওতায় বেসরকারি আমদানিকারকদের মাধ্যমে প্রায় দুই লাখ টন নন-ইউরিয়া সার আমদানির জন্য গত ৭ জুন দরপত্র আহ্বান করে। ওই দরপত্রে ২ লাখ মেট্রিক টন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট), ৪ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) এবং ৩০ হাজার মেট্রিক টন পাউডার এমওপি সার আমদানির জন্য গতকাল রোববার (২৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে আমদানিকারকদের দরপত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে, নির্ধারিত দিনে দেশের ৩৫-৪০ জন সার আমদানিকারকের মধ্যে কেউ দরপত্র জমা দেয়নি।

আমদানিকারকরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছরই সার দেশে আনার পরে তিন মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করা হয়। তবে গত বছরের পাওনা এখনো পরিশোধ করেনি সরকার।

সরকারের কাছে বিগত বকেয়া প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। তারপরও বকেয়া কত পরে পরিশোধ করা হবে সেটা মন্ত্রণালয়ের কেউ বলতে পারছেন না। এক কথায় পাওনা আদায়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

পরিস্থিতিগত কারণে আমদানিকারকরা সরকারের কাছ থেকে বকেয়া না পাওয়ায় বিদেশি সাপ্লাইয়ারদের টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি। এজন্য তারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

এছাড়াও আমদানীকারকদের স্থানীয় ব্যয় বাবদ টন প্রতি ১৫০০ টাকা দেওয়া হতো। যা এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তারপরও সাবেক আমলের ওই ব্যয় বাড়াচ্ছে না মন্ত্রণালয়।

বর্তমান অবস্থায় ডলার সংকটের কারণে কোনো ব্যাংক এলসি খুলতেও রাজি হচ্ছে না। এসব অনিশ্চয়তার কারণেই আমদানিকারকরা টেন্ডারে অংশ নেয়নি।

বেসরকারি সার আমদানিকারক মেসার্স শেখ ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে সরকারি কার্যাদেশে আমার প্রতিষ্ঠান এমওপি, ডিএপি, টিএসপি আমদানি করেছে। এখন সরকারের কাছে আমার প্রতিষ্ঠান বকেয়া বাবদ প্রায় ৮০০ কোটি টাকা পাবে। তিনমাসে দেওয়ার কথা থাকলেও গত ১৪ মাসেও টাকা পাইনি।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক সুদ বেড়েই যাচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে ঋণ খেলাপি হয়ে যাবো। তারপরেও এই মুহূর্তে ডলার সংকট, ব্যাংকও এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না তারমধ্যেই মন্ত্রণালয় নতুন টেন্ডার কল করেছে, তাহলে আমরা কীভাবে অংশ নেব?  যেখানে টাকা পাওয়া অনিশ্চিত সেখানে ব্যবসায়ীরা কীভাবে ব্যবসা করবে?

এ সব বিষয়ে জানতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং উপ-প্রধান বদিউল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি সেটি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
ইউজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।