ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফেরার চেয়ে ট্রেনে যাচ্ছে বেশি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৩
ফেরার চেয়ে ট্রেনে যাচ্ছে বেশি ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: এবার ঈদুল আজহার যারা টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছেন, তাদের বেশিরভাগেরই যাওয়া-আসার ট্রেন ভ্রমণ অনেকটা স্বস্তির হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেশির ভাগ যাত্রী।

যাত্রীরা বলছেন, ঢাকায় ফেরার সময় ট্রেন সময়মতো স্টেশন ছাড়লেও মাঝপথে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় ঢাকা পৌঁছতে কিছুটা দেরি হয়েছে।

এছাড়া যাত্রীদের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।

শনিবার (১ জুলাই) ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন রাজধানী থেকে বাড়ি ফিরছেন অনেকে। কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকামুখী যাত্রীর তুলনায় ঈদ পরবর্তী ছুটি কাটাতে ঘরমুখো মানুষের চাপ ছিল বেশি। পাশাপাশি এদিন বেশির ভাগ ট্রেনই ঢাকা কমলাপুর স্টেশনে সময়মতো এসে পৌঁছে, ট্রেনের শিডিউলের তেমন কোনো বিপর্যয় হয়নি। তবে আগামীকাল রোববার থেকে সরকারি ছুটি শেষ হওয়াতে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে সকাল ১০ টায় কমলাপুরে ঢাকা রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিরিয়াল ধরে প্ল্যাটফর্মার ভেতর ঢুকছেন যাত্রীরা। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে প্রত্যেকের টিকিট চেক করছেন রেলের কর্মীরা। এ সময় জামালপুর এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল যাত্রী নেওয়ার জন্য পৃথক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল।

কমলাপুরে বেশিরভাগ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যবারের ঈদ যাত্রায় টিকিট কাটলেও অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে ট্রেনে সিট পাওয়া যেত না। অনেকে টিকিট থাকা সত্ত্বেও সিটে বসতে পারতেন না। কিন্তু এবার তেমন কিছুই হয়নি। বিনা টিকিটে কেউ স্টেশনে ঢুকতে না পারায় স্বস্তিতেই ঢাকা ফিরেছেন টিকিট ধারী যাত্রীরা।

সকাল ১০ টায় ৬ নম্বর প্লাটফর্মে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে তারাকান্দি থেকে ঢাকায় আসেন সোলাইমান সবুজ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টিকিট অনলাইনে কেটেছি। ঢাকায় আসার সময় নির্ধারিত সময়েই স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়েছে। অনেকটা স্বস্তি নিয়েই ট্রেনে ঢাকায় ফিরেছি। তবে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবারের বাকিরা পরে ঢাকা আসবে। আমার অফিস কাল থেকে খুলবে তাই আজকে ঢাকায় চলে আসা। ট্রেন ঠিকঠাক মতোই কমলাপুর পৌঁছায়। ট্রেনে কোনো ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

পরবর্তীতে দেড় ঘণ্টা পর এই অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস বেলা সাড়ে ১১টায় পুনরায় ঢাকা থেকে তারাকান্দির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ ট্রেনে করে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন হামিদা বেগম। সঙ্গে তার এক ছেলে এবং দুই মেয়ে ছিল। ছেলেমেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকায় প্রতিবার ঈদের পরই বোনের বাড়ি বেড়াতে যান তিনি।  

হামিদা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত ঈদ মৌসুমে ট্রেনে যাত্রীর চাপ থাকে অনেক বেশি। আর তখন বাচ্চা নিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করা কষ্ট। ট্রেন যাতে মিস না হয় তাই এক ঘণ্টা আগেই স্টেশনে এসেছি।

এদিন জামালপুর এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। এ ট্রেনে যাওয়ার জন্য দেড় ঘণ্টা আগে প্ল্যাটফর্মে হাজির হন সাব্বির হোসেন হৃদয়। কথা হলে তিনি বলেন, ঢাকায় কোরবানি দেওয়ায় ঈদে বাড়ি যাওয়া হয়নি। অফিস থেকে অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছি। তাই এই সুযোগে দুদিনের জন্য বাড়ি যাচ্ছি। জামালপুর যাতায়াতে বেশির ভাগ সময় ট্রেন ব্যবহার করা হয়। গেল রোজার ঈদ থেকে ট্রেনের যাত্রা অনেকটা স্বস্তির হয়েছে। আগে জামালপুরের ট্রেনে যাত্রীর চাপ থাকত অনেক বেশি। অনেকেই টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করতেন। তবে এখন স্টেশন কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি করায় টিকিট ছাড়া কেউ স্টেশনে ঢুকতে পারছেন না। যে জন্য আমরা যারা টিকিট ধারী যাত্রী আছি তাদের জন্য যাত্রাটা অনেকটাই আরামদায়ক হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার স্টেশন মাস্টার মো. আফছার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকায় ২০টি ট্রেন এসেছে এবং ছেড়ে গেছে। আরও অনেকগুলো ট্রেন প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষায় আছে। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারছেন। প্রতিটি ট্রেন সঠিক সময়ে গন্তব্যে যাচ্ছে এবং ফিরছে। যদিও এখন পর্যন্ত ঢাকায় ফেতর যাত্রীর তুলনায় ঢাকা ছাড়ার যাত্রীদের চাপ বেশি। আগামীকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২৩
ইএসএস/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।