বরিশাল: নগরে রেদোয়ান আহমেদ রাধো (২৬) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর হাত কেটে আলাদা করে ফেলেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
সোমবার (৩ জুলাই) দিবাগত রাতে বরিশাল জিলা স্কুলের পেছনের গেট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও রেদোয়ান নির্দিষ্ট কারো অনুসারী নন। তার বাবা জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে রেদোয়ানকে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে নেয় অজ্ঞাতরা। রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে রেদোয়ানের অবস্থার কথা তাকে জানানো হয়।
মোবাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর জানতে পারি ছেলের চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই দেরি না করে দ্রুত ঢাকা আসি। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ায় হাতটি জোড়া লাগানো যায়নি। রেদোয়ান এখন শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার রক্তপাত হচ্ছে। অবস্থা ভালো নয়।
এ ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। রেদেয়ানের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় নগরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা মামুনকে একমাত্র নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাত বিচ্ছিন্ন করা ধারালো রাম দাটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নামধারী আসামি মামুন (৩০) রেদোয়ানের পূর্ব পরিচিত। দুজনের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মামুন ফোন করে রেদেয়ানকে জিলা স্কুলের পিছনে গেটে যেতে বলে। সেখানে রাত ১১টায় পৌঁছলে মামুনসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন রেদোয়ানকে মারধর করে। পরে অজ্ঞাতরা দার বাঁ হাত টেনে ধরে ও মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কনুইয়ের উপর থেকে সেটি বিচ্ছিন্ন করে। রেদোয়ান অচেতন হওয়ার আগে মামুনসহ বেশ কয়েকজনের নাম জানিয়েছিল বলেও জানান জয়নাল আবেদীন।
ঢাকায় রেদোয়ানের সঙ্গে থাকা তার খালাতো ভাই খলিল সিকদার বলেন, ৫-৬ বছর আগে মামুনকে মারধর করেছিল রেদোয়ান। এ নিয়ে শত্রুতা হয়। তবে তাদের মধ্যে শত্রুতা মিটে গিয়েছিল। তারা একসাথে চলতো। মামুনের ফোন পেয়েই জিলা স্কুলের পেছনের গেটে গিয়েছিল রেদোয়ান। সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পায় অজ্ঞাত কয়েকজন এসে ঘিরে ধরে। তারা রেদেয়ানকে মারধর করে হাত কেটে ফেলেছে। এছাড়াও তাকে জবাই করার চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু রেদোয়ানের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ও কাছে থাকা পুলিশে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়েছে।
খলিল আরও জানান, রেদোয়ানের হাত বাদ দিয়েছে চিকিৎসক। জোড়া লাগানো যাবে না।
হামলাকারীদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয়ের বিষয়ে স্বজনরা নিশ্চিত না হতে পারলেও রেদোয়ান সুস্থ হলে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান জানিয়েছেন, আহত রেদোয়ান তার অনুসারী। যার হাত আর জোড়া লাগানো যাবে না।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা তানভীর হাওলাদার নবীন (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি রেদোয়ানের হামলার সঙ্গে জড়িত কিনা তদন্ত করা হবে। নবীন নগরের ভাটিখানা সুন্নিয়া মসজিদ এলাকার লিটন হাওলাদারের ছেলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৩
এমএস/এমজে