ময়মনসিংহ: সম্প্রতি জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ড সামার গেইমসে স্বর্ণ পদক পেয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্বর্ণা আক্তার (১৪)। এতে উচ্ছ্বসিত স্বর্ণার পরিবার, সহপাঠী, এলাকাবাসিসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
তবে গত ২৮ জুন স্বর্ণা পদক নিয়ে দেশে ফিরলেও জানতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।
অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল মনসুর স্বর্ণা আক্তারের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান।
এ সময় তিনি নগদ অর্থ ছাড়াও একটি নতুন ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে তার চিকিৎসার দায়িত্বও নেন। এতে খুশি স্বর্ণা ও তার পরিবার।
এ সময় ইউএনও এর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এটিএম আরিফ, কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান ও স্থানীয় চন্ডীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন ভুইয়া।
জানা যায়, পদক জয়ী স্বর্ণা উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম গ্রামের দরিদ্র কৃষক নুরু মিয়ার (৫৫) মেয়ে। জন্ম থেকেই স্বর্ণা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। সে স্থানীয় সেবা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সূত্র মতে, জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ড সামার গেইমসে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন স্বর্ণা। তার নেতৃত্বেই চূড়ান্ত পর্বের খেলায় ইসরাইলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ দল এবং সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণা পায় স্বর্ণ পদক।
ইউএনও আবুল মনসুর বলেন, স্বর্ণা আক্তার বার্লিনে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে দেখা করেছিল। ওই সময় আমি স্বর্ণার পাসপোর্টের ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছিলাম। তখন স্বর্ণার অভিভাবককে বলেছিলাম- স্বর্ণা দেশে আসার পরও যেন আমাকে জানানো হয়। কিন্তু স্বর্ণা দেশে আসার বিষয়টি তারা কেউ জানাননি। পরে পত্রিকা পড়ে খবরটি জানতে পেরেছি।
এ বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমরা খুবই গর্বিত স্বর্ণার এই সাফল্যে। তাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। আগামীতেও স্বর্ণা দেশের জন্য আরো অনেক কিছু বয়ে আনবে বলে আমরা আশা করছি।
এ বছর জার্মানির বার্লিনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য অনুষ্ঠিত ‘স্পেশাল অলিম্পিকস ওয়ার্ল্ড সামার গেমস বার্লিন -২০২৩’-এর উদ্বোধন হয় ১৭ জুন। খেলা চলে ২৬ জুন পর্যন্ত। বিশ্বের ১৭০টি দেশ থেকে প্রায় ২৫ হাজার ক্রীড়াবিদ, কোচ এবং কর্মকর্তা ওই খেলায় যোগদান করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকেও ৮১ জন ক্রীড়াবিদ ও কর্মকর্তাসহ ১১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল খেলায় অংশগ্রহণ করতে ১২ জুন ভোর ৫টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে জার্মানির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। নান্দাইলের স্বর্ণা আক্তারও ওই খেলায় অংশ গ্রহণকারী নারী ফুটবল দলের একজন সদস্য। ওই গেমসে বাংলাদেশ দল মোট ১৩টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য ও ৩টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৩
এসআইএস