ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জাতীয় নীতিমালাসহ ৬ দাবি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
জাতীয় নীতিমালাসহ ৬ দাবি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অনতিবিলম্বে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন এই সেবাখাতের চালকেরা।

সোমবার (১০ জুলাই) সেবাখাতে বিআরটিএ কর্তৃক অ্যাম্বুলেন্সে প্রাইভেট কারের মতো আয়কর (এটিআই) নেওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতি।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১। সেবাখাতে বিআরটিএ কর্তৃক অ্যাম্বুলেন্সে প্রাইভেট কারের মতো আয়কর (এটিআই) না নেওয়া।

২। অনতিবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা।

৩। অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অ্যাম্বুলেন্সের টোল ফ্রি বাস্তবায়ন করা।

৪। দেশের প্রত্যেকটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের পার্কিং সুবিধা দেওয়া।

৫। রোগী থাকা অবস্থায় প্রতিটি পাম্পে সিরিয়াল ছাড়া তেল এবং গ্যাস নিতে দেওয়া।

৬। সড়কে হয়রানি মুক্ত অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাদল মাতব্বর বলেন, নানা দুর্যোগে দুঃসময়ে আমরা মানুষের পাশে থাকলেও বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যা নিয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে আসছি। করোনা মহামারির সময় দেশের মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে ঘরে নিরাপদে অবস্থান করেছে, তখন মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সহকর্মীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে গেছে। করোনা সংক্রমণের ভয়ে পরিবার প্রিয়জনকে ঘরে রেখে আমাদের সহকর্মীদের হোটেল কিংবা গাছতলায় থাকতে হয়েছে।

তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা চুড়িহাট্টা, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুন, চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে শুরু করে দেশের যেকোনো দুর্যোগ দুঃসময়ে অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো সেবা দিয়ে যেতে কোনো দিন কার্পণ্য করেনি। কিন্তু এর বিনিময়ে কোনোদিন প্রতিদান চাইনি আমরা।

তিনি আরও বলেন, জাপান থেকে আমরা অ্যাম্বুলেন্স আমদানি করি। বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন করি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবেই, অথচ আয়কর দেওয়ার সময় দিতে হয় প্রাইভেট গাড়ি হিসেবে। হাসপাতাল এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে আয়কর নেওয়া হয় মাত্র ৫২ টাকা। অথচ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অতীতে নেওয়া হতো ৩০ হাজার টাকা, এ বছর থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি। সেবাখাতে একই দেশে দুই ধরনের আইন কি করে হয় সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। সেবার ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা এমন হটকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই।

বাদল মাতব্বর বলেন, যদিও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সেবায় আমাদের অ্যাম্বুলেন্স অন্তর্ভুক্ত হয়ে সেবা দিয়ে আসছি আমরা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, অ্যাম্বুলেন্স টোল ফ্রি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি অদৃশ্য কারণে। টোল ট্যাক্স অ্যাম্বুলেন্সের নেওয়া হলেও আমাদের মানি রিসিট দেওয়া হয় মাইক্রোবাসের।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে ঘুরেও আমরা এর কোনো প্রতিকার পাইনি। জাতীয় নীতিমালার দাবিতে ৬৪ জেলায় মানববন্ধন করা হলেও সুরাহা হয়নি। উচ্চ আদালতে একটি রিট করা হলেও সমাধান হয়নি। তাই আমরা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নসহ ছয় দফা দাবি জানাচ্ছি।

অনতিবিলম্বে দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সমিতির নেতারা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি মো. দবির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. উজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা চাঁন মিয়া, সমিতির ঢাকা জেলার সভাপতি আবু সালেহ খান রিপন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।