ঢাকা: বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (১০ জুলাই) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশে সিজিআইএআর- সম্পর্কিত কৃষি উদ্ভাবন গ্রহণ ও প্রভাব পরিমাপ বিষয়ক পরামর্শ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা সংক্রান্ত কনসালটেটিভ গ্রুপ, সিজিআইএআর স্ট্যান্ডিং প্যানেল অন ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট, এসপিআইএ ওই সভা আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সিজিআইএআর এসপিআইএর চেয়ার ড. কারেন ম্যাকোরস, সিজিআইএআরের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক তেমিনা লালানি-শরিফ, সিজিআইএআর এসপিআইএর সিনিয়র রিসার্চার ড. জেমস স্টিভেনসন সভায় বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। এ দেশের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ খাতের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা অবশ্যই মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও এর ভুক্তভোগী। এই চ্যালেঞ্জসহ কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকার কাজ করছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশসমূহকেও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। একে অপরের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে সিজিআইএআরের সহযোগিতা ও নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে আরও গবেষণা ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করবে। সিজিআইএআর আয়োজিত সভায় আসা সুপারিশ এবং সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে। বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রাসঙ্গিক এবং উপযুক্ত নতুন সব উদ্যোগে সহযোগিতা করবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন এমন একটি বিশ্বে বাস করছি যা গ্লোবাল ভিলেজ হিসেবে পরিচিত। তাই কাউকে পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে সিজিআইএআর-সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগ, সহযোগিতা, কারিগরি সহায়তা কৃষি খাতে অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশ কারিগরি সহযোগিতা, গবেষণা ও যৌথভাবে কাজ করার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এমনকি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এখানে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। তার আন্তরিক অবদান, উপযুক্ত পরিকল্পনা, দেশপ্রেম, আত্মবিশ্বাস ও সব ধরনের সহযোগিতা সহজ করার ফলে সবক্ষেত্রে বিশেষ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ কৃষিখাতে বাংলাদেশ উন্নতি করছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ সরকার কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ এ দেশের জনসাধারণ তাদের খাদ্য ও পুষ্টির জন্য এ খাতের ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার পূরণে বর্তমান সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, একটি সুস্থ, উদ্যমী ও মেধাবী নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ খাত খাত দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি উন্নত মাছের জাত সংরক্ষণ, গরুর জাত উন্নয়ন, নতুন মুরগির জাত উদ্ভাবন এবং গবাদি পশুর উন্নয়নের মাধ্যমে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশ এখন মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং অচিরেই দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন বিশ্বের ৫২টি দেশে বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ ও সহযোগিতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
জিসিজি