ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪

সিলেট: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে মসজিদের একটি কাঁঠাল নিলাম নিয়ে দুইপক্ষের আহতদের মধ্যে মোখলেছুর রহমান (৬০) নামে আরেকজন মারা গেছেন। এ নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়ালো।

 

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ভোরে তিনি এক আত্মীয় বাড়িতে আহতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সংঘর্ষে দিন তিনি গুরুত্ব আহত হলেও এক আত্মীয়ের বাড়িতে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

সোমবার (১০ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাজ গ্রামে মসজিদে দ্বীন ইসলাম ও জুনাব আলী পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন মারা যান। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হন।  

সংঘর্ষ চলাকালে নিহতরা হলেন- দ্বীন ইসলাম পক্ষের মো. বাবুল মিয়া (৫৮)। তিনি ইউনিয়নের হাসনাবাজ গ্রামের মৃত ছুফি মিয়ার ছেলে, একই গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে নুরুল ইসলাম (৪২) ও একই গ্রামের জুনাব আলী পক্ষের আব্দুল বাছিতের ছেলে শাহজাহান (৩৬)।

স্থানীয় ও পুলিশ জানায়, হাসনাবাজ গ্রামের মসজিদে এক ব্যক্তি একটি কাঁঠাল দান করেন। মসজিদে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে এই কাঠালটি নিলামে তোলা হয় এবং দাম হাঁকানো হয়। এতে গ্রামের দ্বীন ইসলামের পক্ষের লোকজন দামের কথা শুনা যাচ্ছে না বলে আওয়াজ তুললে প্রতিপক্ষ একই গ্রামের সুনু মিয়া ও জুনাব আলী গংরা বলে উঠেন মসজিদের ভেতরে অবস্থানকারী সবাই শুনলেও তোমরা কেন শুনতে পায়নি। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এরই জের ধরে দ্বীন ইসলামের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ সুনু মিয়া ও জুনাব আলীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে দ্বীন ইসলামের পক্ষের বাবুল মিয়া (৫৮) ও নুরুল ইসলাম (৪২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং সুনু মিয়া জুনাব আলী গংদের পক্ষে মো. শাহজাহান মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যান। এতে উভয়পক্ষের ৪০ জন আহত হন।

এ ব্যাপারে জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাছিত সুজন জানান, সোমবার উভয় পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করে কথা বলেছি। উভয়পক্ষের লোকজন আমাকে সুস্থ করেছিলেন যেকোনো পক্ষই মারামারিতে যাবেন না। এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের শান্ত করে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে চলে যাই। পরে শুনতে পাই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একটি কাঁঠাল নিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। তাছাড়া এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।

এদিকে সংঘর্ষের পর সোমবার বিকেলে সিলেট রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরো গ্রাম পুরুষ শূন্য রয়েছে বলেও জানা গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।