ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক-এগারোর কুশীলবরা প্রেসক্রিপশন দিতে শুরু করেছে: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৩
এক-এগারোর কুশীলবরা প্রেসক্রিপশন দিতে শুরু করেছে: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: এক-এগারোর কুশীলবরা সক্রিয় হয়ে নানা ধরনের প্রেসক্রিপশনও দেওয়া শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো কাউকে সেই ধরনের সরকার গঠনের সুযোগ করে দেবে না।

এটি সার্বভৌম বাংলাদেশ, আমাদের দেশ চলবে আমাদের সংবিধান ও জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী। অন্য কারও প্রত্যাশা কিংবা প্রেসক্রিপশনে আমাদের দেশ চলবে না।

রোববার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়াদি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বাসভবন সুধাসদন তছনছ করা হয়েছিল এবং তার প্রয়াত স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে এক-এগারো পরিবর্তনের পর যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, তারা দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতা গ্রহণ করে। কিন্তু নিজেরাই দুর্নীতি ও দুঃশাসনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা ক্ষমতা গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি-দুঃশাসনের কারণে তারা ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দুর্নীতি-দুঃশাসনে জড়িয়ে পড়ে, তাদের বিরুদ্ধে যখন শেখ হাসিনা সোচ্চার হন, তখন তার কণ্ঠ স্তব্ধ করার জন্য, গণতন্ত্রের পথচলা থামিয়ে দিতে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরমধ্য দিয়ে সেদিন গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিল। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি, মুক্ত শেখ হাসিনার চেয়ে বন্দি শেখ হাসিনা কম শক্তিশালী নয়। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার পর হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ জনগণ। সে কারণে এগারো মাস পরে শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা।

হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াও মুক্তি লাভ করেছিলেন। আজকে সেই দিন। বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো সেই ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না। বাংলাদেশের মানুষ এক-এগারো পরিবর্তনের পর যে ধরনের সরকার এসেছিল, সেই ধরনের সরকার আর কখনো চায় না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং এক-এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে। তারা নানা জায়াগায় প্রকাশ্যে-গোপনে বৈঠক করছে। বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে ধরনাও দিচ্ছে। এক-এগারোর কুশীলবরা সক্রিয় হয়ে নানা ধরনের প্রেসক্রিপশনও দেওয়া শুরু করেছে।

গত কয়েকদিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক সংলাপের প্রশ্নটি এসেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা দেশের আইন ও সংবিধানের আলোকে দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চায়। সেই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে এসেছেন তারা।

তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে বিদেশিরা আমাদের কাউকে কোনো তাগাদা দেয়নি। সংলাপের কথা এক-এগারোর কুশীলবরা ও অন্য কিছু ব্যক্তিবিশেষ বলছে। বিএনপিও তো সংলাপের কথা বলছে না। তারা-তো বলছে না যে, আমাদের সঙ্গে সংলাপ করতে চায়। এটা কারা বলছে, সেটা আপনারা কিছুটা জানেন। আমরাও জানি।

ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশে শান্তি-স্থিতিশীলতা চাইবে, সেটিই স্বাভাবিক। তাদের বক্তব্যে সেটি উঠে এসেছে। তারা জানে এবং বোঝে যে, সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। দেশ অগ্রগতিও অব্যাহত থাকবে। সেটি অনুধাবন করতে পেরে শীর্ষ ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান বলে দৃঢ়ভাবে ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। এখন যারা নানা রকম কথাবার্তা বলে, এখান থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়ার দরকার আছে।

বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা যখন রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়, তখন সরকারি দল হিসেবে আমাদের একটা বাড়তি দায়িত্ব আছে। সরকারি দলের দায়িত্ব দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি বজায় রাখা। আগুন সন্ত্রাসীরা যাতে মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক কর্মসূচির ব্যানারে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, সেক্ষেত্রে জনগণের সঙ্গে থাকা আমাদের দায়িত্ব।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।