ঢাকা: মানুষ পার্বত্য অঞ্চলকে কফি ও কাজু বাদামের অঞ্চল হিসেবে চিনবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
রোববার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।
বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কফি ও কাজু বাদামের চাষ ভালো হয়। দারিদ্র্য হ্রাস করাতে কফি ও কাজু বাদাম চাষে জোর দিচ্ছি। এখন সিলেটকে মানুষ যেমন চায়ের নগরী হিসেবে চিনে, তেমনি একদিন পার্বত্য অঞ্চলকে সবাই কফি ও কাজু বাদামের অঞ্চল হিসেবে চিনবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় মিশ্র ফলের চাষ হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষদের বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দিচ্ছি। সেই সোলার প্যানেল দিয়ে বাতি জ্বলছে, ফ্যান চলছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলার বান্দরবান পৌরসভা ও লামা পৌরসভার জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে পানি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মাস্টার প্রেইন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শেষ ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি শতভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে সে কথা বলবো না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। মাঝে মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমাধানে সক্ষম।
নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের ৬ সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করতে চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বীর বাহাদুর বলেন, নির্বাচনের বিষয় নির্বাচন কমিশন দেখবে। তারা স্বাধীন। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন নির্বাচন হবে অবাধ-নিরপেক্ষ। নির্বাচনের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানাই। নির্বাচন কমিশন অনুমতি দিলে অবশ্যই সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে তাদের জন্য। চাইলে আপনারাও (সাংবাদিক) গিয়ে পার্বত্য অঞ্চল ঘুরে আসতে পারেন। গেলেই দেখতে পারবেন পার্বত্য অঞ্চলের কী উন্নয়ন হয়েছে।
এর আগে আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলা। কিন্তু ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসন-শোষণ এবং স্বাধীনতা উত্তর অবহেলা এ অঞ্চলের অফুরান সম্ভাবনাকে সংকুচিত করেছে। ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও আর্থ-সামাজিক সূচকে এতকাল এ অঞ্চল ছিল অবহেলিত ও পশ্চাদপদতায় নিমজ্জিত। এমনি প্রেক্ষাপটের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অদম্য সাহসী কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ, সুদূরপ্রসারী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার শ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিরাজমান দুই যুগের সংঘাতের অবসান ঘটে- বলেন বীর বাহাদুর।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই বৃহত্তর পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় নামকরণে একটি বিশেষায়িত মন্ত্রণালয় স্থাপন করা হয়। শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৫টি ধারা পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাকি ৭টি ধারার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৩
জিসিজি/আরবি