রাজশাহী: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, দৃশ্যমান ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার তা আমরা নিয়েছি। বিভিন্ন স্তরে আমাদের যে নির্বাচনী কার্যক্রমের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা তথা নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ শতবর্ষের একটি ঐতিহ্যবাহী নিরাপত্তা বাহিনী। আমাদের জনবল ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের ইকুইপমেন্ট, লজিস্টিক, জনবল ও প্রশিক্ষণ আছে। সেইসঙ্গে আমাদের শত বছরের দায়িত্ব পালনের একটা অভিজ্ঞতা আছে। এ সমস্ত কিছুর সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী পুলিশ লাইন্স মাঠে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ বাহিনী একটি দক্ষ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এক সময় এ দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের হোলি খেলা চলছিল। সেই অবস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে দায়িত্ব পালন করে এ দেশকে শান্তিপূর্ণ একটি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে, বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তার ফলশ্রুতিতে দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে।
আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাবাদকে মোকাবিলা করে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ রাখতে পেরেছি। পেশাদারিত্বের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্য ওয়েল মোটিভেটেড। যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য সক্ষম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন- এদেশের পুলিশকে একটি স্মার্ট পুলিশ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং উন্নত দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সেই দিকনির্দেশনায় ২০৪১ সালের উন্নত বিশ্বের জন্য স্মার্ট পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
আইজিপি বলেন, এক সময় দেশে জঙ্গিবাদের কী ভয়াবহ অবস্থা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই অবস্থা থেকে এখন স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। এর আগে আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওই সময় আমাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ ডলার। আর বর্তমানে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ ডলার। অর্থাৎ পাঁচ গুণ বেড়েছে। আর আমাদের বাজেট বেড়েছে ১২ গুণ। বাংলাদেশে রিজার্ভ বেড়েছে ৩৩ গুণ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বদলে গেছে। এজন্য পাকিস্তানিরা যারা আমাদের তাদের প্রজা বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল আজ তারাও বলে যদি উন্নয়ন করতে চাও তাহলে বাংলাদেশকে অনুসরণ কর। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। এসজিডির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় বেলুন-ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে আরএমপির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করেন আইজিপি। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুলিশ লাইন মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মীর রেজাউল আলম ও রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আব্দুল বাতেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল খালেক, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরে বিকেলে রাজশাহীস্থ সব ইউনিটের পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আইজিপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
এসএস/আরবি