ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সজীবের মৃত্যু নিয়ে অপরাজনীতি করছে বিএনপি: লক্ষ্মীপুরের এসপি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
সজীবের মৃত্যু নিয়ে অপরাজনীতি করছে বিএনপি: লক্ষ্মীপুরের এসপি

লক্ষ্মীপুর: ‘আর্থিক লেনদেন ও বিয়ে সংক্রান্ত ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের যুবক সজীব হোসেন। আর নিরীহ যুবকের লাশ নিয়ে অপরাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি।

এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই, পুরোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ’ 

বুধবার (১৯ জুলাই) লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, প্রাথমিক সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, সজিব হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। বিএনপি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইতোপূর্বে ভিন্ন একটি ছবি নিয়ে লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে গুজব ছড়ানো হয়, যার সত্যতা আদৌ পাওয়া যায়নি।

ব্যক্তিগত টাকা-পয়সা লেনদেনের বিবাদ নিয়ে সজিব খুন হয়েছেন জানিয়ে এসপি বলেন, চার-পাঁচজন যুবক সজীবকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি কোপায়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রাণ হারায় সজিব।

এসপি বলেন, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে লক্ষ্মীপুর শহরস্থ গোডাউন রোড হতে একটি পদযাত্রা বের হয়। ছয় থেকে সাত হাজার লোকের পদযাত্রা বের হয়ে দক্ষিণ তেমুহনী হয়ে আধুনিক হাসপাতালের সামনে আসে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশের ব্যারিকড ভেঙে লাঠিসোটা, ইট পাটকেল ও ককটেল বোমাসহ অতর্কিতভাবে পুলিশের ওপর বিএনপির উশৃংখল নেতাকর্মীরা আক্রমণ করে।  

কর্তব্যরত পুলিশ জনগণের জানমাল ও সরকারি মালামাল রক্ষার্থে তাৎক্ষণিক গ্যাসগান ও শর্টগানের রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। তারা আধুনিক হাসপাতালের সামনে বাইরে রাখা মোটরসাইকেল ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া আশেপাশের দোকানপাট ভাংচুর করে।  

তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে একজন লোক রক্তাক্ত মূমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে মর্মে জনৈক ব্যক্তি জানান।

এসপি জানান, পুলিশ কল রেসপন্স করলেও বিএনপির সাথে সংঘর্ষ চলছিল বলে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিলো না। তাই পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয়। আহত ব্যক্তিটি জনৈক নোমানের বাসার সামনে বারান্দায় পড়েছিলেন। নোমান বাসার দরজা খুলে তাকে দেখতে পেয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন।

পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে বিলম্ব হওয়ায় নোমান ইতোমধ্যে তার পরিচিত ৩/৪টি অ্যাম্বুলেন্সের মালিককে কল করলেও উত্তপ্ত এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও রাস্তা অবরুদ্ধ থাকার কারণে তারাও আসতে অপরাগতা প্রকাশ করে। উশৃংখল বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ দ্রুত সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এসপি বলেন, বিএনপির সাথে পুলিশের যে স্থানে সংঘর্ষ হয়, সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডের স্থানের দূরত্ব প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার। বিএনপির পদযাত্রার রুটের সম্পূর্ণ বিপরীতে মূল সড়ক হতে দেড়শ গজ দূরে কলেজ রোডের পাশে ফিরোজা টাওয়ারের গলির মুখে চার-পাঁচ জন ছেলে সজীবকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে সজীব নিজেকে বাচাঁতে দৌড়ে ফিরোজা টাওয়ারের এসএস গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠে ফ্লাটবাসার নোমান হোসেনের পাশের ফ্লাটের দরজার সামনে বসে শুয়ে পড়ে যায়। নোমান মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবের নাম ঠিকানা জিজ্ঞেসসহ আজকের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে এসেছে জিজ্ঞেস করলে সজীব জানায়- সে কোন প্রোগ্রামে আসেনি। তাকে এভাবে আঘাত করার কারণ হিসেবে সে জানিয়েছে, পাওনা টাকা এবং বিবাহ সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জোর ধরে তারা হামলা করেছে।  

এসপি আরও বলেন, ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখি। এতে দেখা যায় সজীবের মৃত্যু এবং ভাড়াটিয়া মো. নোমান হোসেনের সাথে সজীবের শেষ মুহূর্তে কিছু কথা হয়। হত্যাকাণ্ডের সাথে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির কোনো সত্যতা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।