জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের শালগ্রামে মায়ের ওড়না চুরির অপবাদে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর ব্লেড দিয়ে মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ছয় বছর আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নের মাঝিনা গ্রামের আবু হাসানের মেয়ে হানিফার (২৩) বিয়ে হয় সদর উপজেলার শালগ্রামের আব্দুল মোমিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিতেন স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে জাহাঙ্গীর তার স্ত্রীকে বাঁশ দিয়ে মারলে স্ত্রী হানিফা অজ্ঞান হয়ে যান। পরে ব্লেড দিয়ে মাথার সামনের অংশের চুল কেটে গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে ঝোলাতে গেলে শ্বশুর তাকে উদ্ধার করে।
নির্যাতনের স্বীকার হানিফা বলেন, কোরবানির ঈদের সময় আমার শাশুড়ির একটা ওড়না হারিয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সেই ওড়নাটি আমি চুরি করেছি বলে অপবাদ দেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমার স্বামী বাঁশ দিয়ে মারলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে তিনি আমার চুল কেটে দেন। এ ঘটনার পরে শনিবার সকালে আমাকে বাবার বাড়িতে রাখতে আসেন আমার স্বামী। এ অবস্থায় গ্রামের লোকজনরা তাকে আটকে দেন।
স্থানীয় আটাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিনুর ইসলাম বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়েটির ওপর নির্যাতনের খবর পাই। এর আগে একাধিক বার সালিশ বৈঠক করেছি। সর্বশেষ নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে দিয়ে যে অন্যায় করেছে, তা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, ঘটনাটি জয়পুরহাট সদর উপজেলার। কিন্তু মেয়েটির বাড়ি আমার উপজেলায়। খবর পেয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে হানিফার বাড়ি থেকে আটক করে পাঁচবিবি থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় হানিফার মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে স্বামী জাহাঙ্গীর, শ্বশুর আব্দুল মোমিন, শাশুড়ি জাহেদা বেগম ও ননদ মুরশিদা বেগমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ইতোমধ্যেই স্বামীকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্যদের খুব শিগগরিই আটক করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
আরএ