সাভার (ঢাকা): সাভারে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। রোববার (৩০ জুলাই) বিকেলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামি স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক ফুলকির সম্পাদক নাজমুস সাকিব, আরেক আসামি আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল হক। শুক্রবার রাতে সাভারের বিরুলিয়া এলাকার মো. শাহীনুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তি সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে একইদিন পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
মামলার বাদী মো. শাহীনুর ইসলাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২৭ জুলাই দুপুর ২টার নিজ বাসায় খাবার শেষে দেখতে পাই, সাভার থেকে প্রকাশিত নাজমুস সাকিব সম্পাদিত দৈনিক ফুলকি পত্রিকার শেষের পাতায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে ‘অবশেষে পদত্যাগ করছেন এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
দেশ, রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য জামায়াত-বিএনপির অজ্ঞাতনামা কয়েকজন নেতার পরস্পর যোগসাজশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সুপরিকল্পিত এ গুজব-অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বাংলাদেশের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এ গুজব-অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত চক্রটি।
মামলার বিষয়ে ফুলকির সম্পাদক নাজমুস সাকিব বলেন, আমি পবিত্র হজ পালন করে ৪১ দিন পর ২৫ জুলাই দেশে আসি। ২৬ জুলাই রাতে পত্রিকার মেকআপে পেছনের পাতায় কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নিউজটি দেওয়া হয়। ওই নিউজে ভুলবশত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করা হয়, যা পরদিন ২৭ জুলাই ছাপা হয়। ভুল সংশোধন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে পরদিন ২৮ জুলাই সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তারপরও সাভার মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে এ মামলায় আমার সঙ্গে অন্য একটি পত্রিকার সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। এভাবে সংবাদপত্রের কণ্ঠ চেপে ধরার চেষ্টা করা হলে দেশে সংবাদপত্র প্রকাশ ও সাংবাদিকতা করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছিলেন যুবলীগ নেতা ফরিদ আল রাজী। পরে আদালত বিষয়টি পর্যালোচনা এবং তদন্ত করে কোনো প্রমাণ না পেয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেন।
এদিকে পত্রিকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও মামলার আসামি হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে দৈনিক ফুলকির কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় আমি কীভাবে আসামি হলাম সেটিই বোধগম্য নয়। বিষয়টি আইনিভাবেই মোকাবেলা করব।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফুলকি পত্রিকার সম্পাদক ও আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৩
এসএফ/আরএইচ