ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পূর্ণিমার জোয়ারে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৩
পূর্ণিমার জোয়ারে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

বাগেরহাট: পূর্ণিমার জোয়ারে বাগেরহাটের ভৈরব, পানগুছি, পশুর, দড়াটানাসহ বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বেড়েছে। ফলে জোয়ারের পানিতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকার অন্তত সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে।  

বুধবার (০২ আগস্ট) দুপুরে জোয়ারে হঠাৎ করে নদী-খালের পানি বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

দুপুরে হাড়িখালি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব নদীর তীরে থাকা হাড়িখালি ও মাঝিডাঙ্গা এলাকার অন্তত ২০টি বসত ঘর প্লাবিত হয়েছে। কারও কারও ঘরের মধ্যেও পানি উঠে গেছে। ছাগল ও গবাদি পশু ঘরের খাটের ওপর রেখেছেন তারা। রান্না ঘরে পানি ওঠায় রান্না বন্ধ রয়েছে কয়েকজনের।

বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প মাঝিডাঙ্গা এলাকাও মাঝে মাঝে প্লাবিত হয়। শুধু হাড়িখালি-মাঝিডাঙ্গা নয়, বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, কলাবাড়িয়া, পানিঘাটসহ বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  

অন্যদিকে পানগুছি নদীর পানিতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রধান বাজার, পৌরসভার একাংশ, উপজেলা পরিষদ চত্বর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া, বহরবুনিয়া, পঞ্চকরণ, তেলিগাতি, হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হাড়িখালি এলাকার আফছার আলী হাওলাদার বলেন, বেড়িবাঁধ নেই, ঘর দুয়ার সব তলাইয়া গেছে। ঘরে যাওয়া লাগে কাছা দিয়া। রান্না বান্না সব বন্ধ। আমাদের দিকে কেউ খেয়াল করে না।

একই এলাকার মনির শেখ বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস এলে খুবই কষ্টে থাকতে হয়। মাঝে মাঝেই ঘরে পানি উঠে যায়। ভৈরবের পাশে যদি একটি বাঁধ দেওয়া থাকত, তাহলে আমরা কিছুটা শান্তিতে থাকতে পারতাম।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের বুলি কাজী বলেন, জোয়ারের পানিতে মোরেলগঞ্জ বাজার, উপজেলা চত্বরসহ পৌর শহরের বেশকিছু এলাকায় হঠাৎ পানি উঠে যায়। লোকজনের খুব ভোগান্তি হয়েছে। পানগুছি নদীর পাড়ে টেকসই শহর রক্ষা বাঁধ থাকলে, আমাদের এ সমস্যায় পড়তে হত না।

বহরবুনিয়া এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, চারপাশে নদী-আর খালের মধ্যে আমাদের বহরবুনিয়া ইউনিয়ন। হঠাৎ করে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় বেশকিছু পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি থাকায়, পানি সহজে নামছে না বলে জানান রফিকুল ইসলাম। খাউলিয়া, পঞ্চকরণ, তেলিগাতি ও হোগলাবুনিয়া তেলিগাতি ইউনিয়নের বেশকিছু পরিবার পানিবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুপুরে জোয়ারে স্বাভাবিকের থেকে দেড় ফুটের বেশি পানি বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে বাঁধ রয়েছে, সেগুলো এখনও ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। তবে বাঁধ না থাকা কিছু এলাকায় পানি ওঠার খবর পেয়েছি।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, পানিতে যাতে কারও কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুপুরের জোয়ারে স্বাভাবিকের থেকে দেড় ফুটের বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দড়াটনা ও ভৈরব নদীর পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে বাঁধ রয়েছে, সেগুলো এখনও ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। তবে বাঁধ না থাকা কিছু এলাকায় পানি ওঠার খবর পেয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।