ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার দরপত্র চতুর্থবারের মতো বাতিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার দরপত্র চতুর্থবারের মতো বাতিল

সিলেট: উন্মুক্তকরণের দিনই বাতিল হলো ফেঞ্চুগঞ্জ ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের দরপত্র। নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিডিউল জমা না পড়ায় সেটি বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে চারবার দরপত্র বাতিল হলো।

সোমবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দরপত্র দাখিলের সময় নির্ধারণ করা ছিল। এ জন্য সব আয়োজনও করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো শিডিউল না পড়ায় দরপত্রটি আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়।

ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল (র.) সার কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এটিএম বাকী বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেউ শিডিউল দাখিল করতে পারেননি। ফলে আইন অনুযায়ী এই দরপত্র আপনা-আপনি বাতিল হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ পুনরায় দরপত্র আহ্বান করবে।

এ বিষয়ে শাহজালাল (র.) সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিয়াবুর রহমানকে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ নিয়ে চারবারের মতো সার কারখানার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর আগে আরও তিন বার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু অংশগ্রহণকারীরা টাকা দিতে না পারায় তা বাতিল করা হয়।  

২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যায় ফেঞ্চুগঞ্জ ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড। ২০১৬ সালের ৩০ জুন কারখানাটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শিল্প মন্ত্রণালয় এ পুরনো সার কারখানার টেন্ডারে বিক্রি করে স্ক্র্যাপ মালপত্র অপসারণের লক্ষ্যে এনজিএফএফ স্ক্র্যাপ ডিসপোজাল কমিটি নামের উচ্চ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ১০ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে। এরপর বিগত তিনবার দর ভালো পেলেও অংশগ্রহণকারীরা টাকা দিতে না পারায় দরপত্র বাতিল হয়।

জানা যায়, তৃতীয় দরপত্রে গত বছরের ১৮ অক্টোবর অর্থাৎ শেষ দিন পর্যন্ত ২২টি শিডিউল বিক্রি করা হয়। পরদিন ১৯ অক্টোবর তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে ঢাকার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএম বিল্ডার্স লিমিটেড ভ্যাট-ট্যাক্স ব্যাতিরেকে ২৭৫ কোটি টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়। কিন্তু সে প্রতিষ্ঠান নিয়ম মাফিক টাকা দিতে পারেনি।

এরও আগে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার নিলামে মেসার্স আতাউল্লাহ গ্রুপ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১০৩ কোটি ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে কারখানাটি স্ক্র্যাপ হিসেবে কিনে নেয়। কিন্তু নিয়মমাফিক টাকা জমা না করায় এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়েও টাকা জমা দিতে না পারেনি দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি। অবশেষে আদালত থেকে মামলা নিষ্পত্তিক্রমে পুনরায় নিলামের সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিসিআইসি।  

২০২১ সালের ২৫ মে দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ১১ আগস্ট ১৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলেও সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিলামে মেসার্স সাইদুর রহমান ২১১ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরাতন সার কারখানাটি স্ক্র্যাপ হিসেবে কিনে নেয়। কিন্তু নিময়মাফিক টাকা দিতে না পারায় সেটিও বাতিল হয়। আবারও টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্তু ওেই টেন্ডারে ১৩১ কোটি টাকা দরদাতা মের্সাস আল মামুন ট্রেডার্স আদালতের দ্বারস্থ হন। তার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত টেন্ডারের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পরে সেই স্থগিতাদেশ নিষ্পত্তিক্রমে তৃতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিসিআইসির শিল্প প্রতিষ্ঠান সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল (র.) সার কারখানার মাতৃ প্রতিষ্ঠান ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (এনজিএফএফএল)। একের পর এক দরদাতা প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হওয়ায় গত ১ আগস্ট এনজিএফএফএল স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রিতে সীমিত দরপত্র (এলটিএম) আহ্বান করে।

দরপত্র সংগ্রহের শেষ দিন ছিল ২০ আগস্ট এবং দরপত্র গ্রহণের সময়ে ছিল আজ সোমবার (২১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় এবং বেলা আড়াইটায় উন্মুক্ত করার সময় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু শিডিউল ক্রয়কারীরা যথাসময়ে দরপত্র দাখিল করতে পারেননি। ফলে নিয়ম অনুযায়ী চতুর্থবার দরপত্র বাতিল হলো। এ কারণে আবারো দরপত্র আহ্বান করা হবে, জানান সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এনইউ/ আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।