ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নাটোরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, আসামি গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
নাটোরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, আসামি গ্রেপ্তার

নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী (১১) ধর্ষণ ও অন্তঃসত্তা মামলার পলাতক আসামি জাহিদুল ইসলাম খাঁ (৫০) কে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব-৫)।

শনিবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার সময় র‌্যাব-৫ সিপিসি-২ নাটোর ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়।

 

এর আগে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দিনগত রাতে র‌্যাবের ৩টি টিম ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আটক জাহিদুল ইসলাম খাঁ জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে।

এ সময় ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর আশিকুর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৫ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল রিয়াজ শাহারিয়ার জানান, গত বছরের ১৮ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকায় গুরুদাসপুর উপজেলার দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের প্রতিবেশী কথিত দাদা জাহিদুল ইসলাম জোরপূর্বক ধর্ষণ করে একই এলাকার চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে।

এ ঘটনায় হত্যার ভয় দেখানোর কারণে ওই শিক্ষার্থী ভয়ে কাউকে বিষয়টি বলতে সাহস পায়নি। গত জুন মাসে ওই শিক্ষার্থীর শরীরের পরিবর্তন দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জাহিদুল কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষণ হয়েছে বলে জানায় তার পরিবারকে। তার কাছে সব শুনে পরিবারের লোকজন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারে সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

তিনি আরও জানান, গত ১৮ জুন শিক্ষার্থীর দাদি বাদী গুরুদাসপুর থানায় জাহিদুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। তারপর থেকে গা ঢাকা দেয় জাহিদুল। বিষয়টি জানতে পেরে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে শুক্রবার রাতে র‌্যাবের ৩টি টিম ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা গ্রামে তা ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে তাকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।  

লে. কর্নেল রিয়াজ শাহারিয়ার জানান, চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যা গণমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।  

এর পরেই মামলার এজাহারের ওপর ভিত্তি করে র‌্যাব-৫ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে র‌্যাব সদর দপ্তরের সহযোগিতায় নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারিতে আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

অভিযানে র‌্যাব সফল হলেও এই ঘটনা আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ বার্তা দেয়। তাই প্রতিটি পরিবারকে তাদের সন্তানদের প্রতি আরও যত্নশীল ও নজরদারি বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

এদিকে, গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী ভিকটিম ওই শিশুটির আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে তার সিজারিয়ান অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বাংলানিউজকে বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সে মা হতে গিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে শিশুটির সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ অপারেশন হবে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।